আফগানিস্তানে বড় তিনটি বেসরকারি সংস্থা তাদের কার্যক্রম স্থগিত করে দিয়েছে। গতকাল শনিবার তালেবান দেশি ও বিদেশি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) দেশটির নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপরই আজ রোববার এনজিওগুলো এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
সংস্থা তিনটি হলো কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, দ্য নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) ও সেভ দ্য চিলড্রেন।
সংস্থাগুলো আজ এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, ‘নারী কর্মীদের’ ছাড়া তারা কাজ চালাতে অক্ষম।
বেসরকারি সাহায্য সংস্থাগুলো নারীরা যেন তাদের জন্য কাজ শুরু করতে পারেন, সেই ‘দাবি’ জানায়।
নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা বন্ধ করার কয়েক দিনের মধ্যে নতুন এ নির্দেশ জারি করে তালেবান। বলা হয়, নিষেধাজ্ঞা না মানলে সংস্থাগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
তালেবানের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদেল রহমান হাবিব দাবি করেন, আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোয় কর্মরত নারী কর্মীরা পোশাক বিধি মানছেন না।
এ তিন সংস্থার প্রধানেরা বলেন, সংস্থাগুলো এখানকার নারীদের সহযোগিতা না পেলে ‘২০২১ সালের আগস্ট থেকে লাখো আফগানের প্রয়োজনে তাদের কাছে তারা যৌথভাবে পৌঁছাতে পারত না’।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তালেবানের এ নির্দেশ শোনার পর আমরা আমাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছি। দাবি করছি, আফগানিস্তানে আমাদের পরিচালিত জীবন রক্ষাকারী কর্মকাণ্ডে যাতে নারী ও পুরুষেরা সমানভাবে সহযোগিতা করে যেতে পারবে।’
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক শীর্ষ সমন্বয়ক রমিজ অলকবারোভ বলেন, জাতিসংঘ এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করাতে চেষ্টা করছে। এটি ‘পুরো মানবিক সহায়তাকারী সম্প্রদায়গুলোর জন্য একটি লাল রেখা।’
এই কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, তালেবান এনজিওগুলোয় দেশটির নারীদের কাজ করার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে জাতিসংঘ মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারে।
তবে তালেবান তাদের আদেশে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছে, তা পরিষ্কার নয় বলে জানান রমিজ। কারণ হিসেবে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, তালেবানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতিসংঘকে বলেছেন, সংস্থাটি তাদের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবে এবং ‘নারীরাও এ–সংক্রান্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন’।
অন্য মন্ত্রীরা জাতিসংঘের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এলাকায় এবং জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
এনআরসির সেক্রেটারি জেনারেল জ্যান এগল্যান্ড বলেন, প্রায় ৫০০ সাহায্যকারী সংস্থায় ১ হাজার ৪০০ নারী কর্মী রয়েছেন। তাঁরা ‘সব প্রথাগত মূল্যবোধ, পোশাকবিধি, চলাফেরা নিময় মেনে চলে। এবং অফিসেও ছেলে-মেয়েরা আলাদাভাবে’ কাজ করছিলেন।
জ্যান এগল্যান্ড আশা করেন, কয়েক দিনের মধ্যেই এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে। না হলে এনজিওগুলোর কাজ বন্ধ হয়ে গেলে লাখো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।