আফগানিস্তানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে চায় রাশিয়া। দেশটির শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান সার্গেই শোইগু গতকাল সোমবার এক বৈঠকে তালেবান নেতাদের এ কথা জানিয়েছেন। তালেবান সরকারের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কাবুলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বৈঠকে সার্গেই শোইগুর নেতৃত্বে একটি রুশ প্রতিনিধি দল এবং তালেবান সরকারের উপপ্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বারাদার ও দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে সার্গেই শোইগু বলেন, মার্কিন সেনারা অনেক বছর আফগানিস্তানে নিয়োজিত ছিল। সে দৃষ্টিকোণ থেকে দেশটিকে পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রণী ভূমিকা রাখা উচিত।
রাশিয়ার সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান নেতারা আফগানিস্তানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার চাপ কমাতে শোইগুর কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
রুশ নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান দুই দেশের মধ্যে একটি গঠনমূলক রাজনৈতিক সংলাপ আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সংলাপের উদ্দেশ্য হবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংকট নিরসন প্রক্রিয়াকে জোরদার করা।
শোইগু বলেন, আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব নেওয়া উচিত। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। টানা ২০ বছর দেশটিতে মার্কিন সেনারা নিয়োজিত ছিলেন।
রাশিয়ার সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার আশপাশের সবাইকে লুট করে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে আফগানিস্তানের সব সম্পদ ও তহবিল ফেরত দেওয়ার কথা বলছি। লিবিয়া, সিরিয়া ও অন্যান্য দেশের মতো আফগানিস্তানেরও এসব সম্পদ ও তহবিল ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সে জন্য আমার দৃষ্টিতে, আফগানিস্তানকে পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রকে দেশটিতে বিনিয়োগের প্রধান প্রাণশক্তি হওয়া উচিত।’
আফগানিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বারাদার শোইগুকে বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার চাপ কমাতে মস্কোর সহায়তা চায় তালেবান সরকার। তিনি বলেন, ‘আমরা আফগান পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি।’
২০২২ ইউক্রেনে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় সহযোগী দেশগুলোর অব্যাহত চাপের মুখে পড়ে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আফগানিস্তানসহ এশিয়া ও পশ্চিমা বলয়ের বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে উৎসাহিত করে।
গতকাল মস্কো বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি এশিয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে, তবে মস্কোও অঞ্চলটিতে একই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করার কথা ভাববে।