জান্তা নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দেশটির রাজনৈতিক নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন না করায় দলটিকে রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো।
চলতি বছর নির্বাচনে লড়তে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কঠোর নিয়ম চালুর ঘোষণা দেয় মিয়ানমার জান্তা সরকার। নতুন আইন অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচনে লড়তে ইচ্ছুক রাজনৈতিক দলগুলোকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে সু চির দল নিবন্ধনে ব্যর্থ হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, নিবন্ধনে ব্যর্থ হওয়ায় সু চির দল নির্বাচন কমিশনের তালিকা থেকে বাদ পড়ছে।
এনএলডির পক্ষ থেকে এর প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, জান্তার অধীনে আসন্ন নির্বাচন অবৈধ। তাই তারা এতে অংশ নেবে না।
মিয়ানমারে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেবার এনএলডি বিপুল ভোটে জয় পায়। তবে পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতেই এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চিকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। জান্তার পক্ষ থেকে এনএলডির বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনা হয়।
গত জানুয়ারি মাসে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। তবে জান্তাবিরোধীদের দাবি, এ নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি জানায়, নতুন নিয়মে দেশটির ৯০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৫০টি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। আজ বুধবার থেকে অন্য দলগুলো তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাবে। নির্বাসনে থাকা দলটির নেতারা নতুন আইনে নিবন্ধন করতে নিষেধ করেন।
১৯৮৮ সালে এনএলডি প্রতিষ্ঠা করেন করেন সু চি। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হন। কিন্তু তৎকালীন জান্তা ফল প্রত্যাখ্যান করে। ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে সেনা-সমর্থিত দলের বিরুদ্ধে জয় পায় এনএলডি।
সেনা-সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি নিবন্ধন করেছে। গত বুধবার জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং বিরোধীদের দমনপীড়ন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্বাচনের কোনো সময় উল্লেখ করেননি তিনি।