অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মোখার প্রভাবে রাখাইন রাজ্যে প্রবল বাতাস বইছে। ঝরছে বৃষ্টি। আজ রোববার সকালে মিয়ানমার নাউ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
দ্য ইরাবতীর সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি আজ বিকেলে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটুয়ের কাছে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার আশঙ্কায় ইতিমধ্যে রাখাইনের লাখো মানুষ তাঁদের বাড়িঘর ছেড়েছে।
সিটুয়ে, কিয়াকপিউ, মংডু, রাথেডাং, মাইবোন, পাউকতাও, মুনাং শহরের জন্য সর্বোচ্চ স্তরের দুর্যোগসতর্কতা জারি করেছে মিয়ানমারের জান্তা। ইরাবতীর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বেসামরিক জাতীয় ঐক্যের সরকার।
রাখাইনভিত্তিক আরাকান আর্মির এক মুখপাত্র বলেন, গত বুধবার থেকে তাঁরা রাজ্যের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছেন। তাঁরা লোকজনকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। খাদ্যসরবরাহ করছেন। ঘূর্ণিঝড়ের পর লোকজনকে সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আরাকান আর্মির মুখপাত্র।
খ্যাতনামা রাখাইন লেখক ওয়াই হিন অংয়ের ভাষ্য, সিটুয়ে শহরের প্রায় ৭৫ শতাংশ বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে গেছে। এখানে এক লাখের বেশি মানুষ বাস করে।
সিটুয়ে ও তার আশপাশের গ্রামগুলো থেকে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ শহরের পাহাড়ি এলাকার মঠে আশ্রয় নিয়েছে।
ওয়াই হিন অং বলেন, লোকজনের এখন জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, ওষুধ ও শৌচাগার দরকার। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে জানান তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক ইউ আয় অংয়ের ভাষ্য, উপকূলীয় রাথেডাংয়ের গ্রামগুলো থেকে প্রায় ২ হাজার মানুষ সায়তি পাইন গ্রামের মঠ ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।
ইউ আয় অং দ্য ইরাবতীকে বলেন, বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য আরাকান আর্মি সতর্ক করেছে।
পাউকতাওয়ের এক বাসিন্দা বলেন, বৃদ্ধ ও শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য আরাকান আর্মি নৌকা ব্যবহার করছে। তারা খাবারও বিতরণ করছে।
মিয়ানমার নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিটুয়ের অনেক বাসিন্দা গত দুদিন উঁচু স্থানের দিকে গেছে। তবে আজ সকালে অনেক বাসিন্দাকে শহরে দেখা গেছে।
মিয়ানমার এয়ারওয়েজ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে তাদের সব ফ্লাইট আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।