খোলা জায়গার রেস্তোরাঁয় নারীদের প্রবেশে তালেবানের নিষেধাজ্ঞা

আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশের একটি রেস্তোরাঁ।
ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশে বাগান ও খোলা সবুজ জায়গার রেস্তোরাঁয় পরিবার ও নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তালেবান।

ফক্স নিউজের খবর বলছে, ধর্মীয় নেতারা এ ধরনের জায়গায় নারী-পুরুষের মেলামেশা নিয়ে অভিযোগ করার পর এ সিদ্ধান্ত এসেছে। আফগান কর্মকর্তারা বলছেন, নারীদের হিজাব না পরে আসা ও নারী-পুরুষের মেলামেশার কারণে এ বিধিনিষেধ এসেছে।

তবে এ নিষেধাজ্ঞা কেবল হেরাত প্রদেশে খোলা সবুজ জায়গাসহ রেস্তোরাঁগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

তবে হেরাতে নিযুক্ত আফগানিস্তানের নৈতিকতা–বিষয়ক বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা বাজ মোহাম্মদ নাজির বলেছেন, হেরাতের যেসব রেস্তোরাঁয় এ ধরনের খোলা প্রাঙ্গণ রয়েছে এবং পুরুষের প্রবেশাধিকার রয়েছে, শুধু সেসব রেস্তোরাঁতেই নারী ও পরিবারের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এ বিধিনিষেধ শুধু খোলা জায়গার, যেমন পার্কের রেস্তোরাঁগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বিশিষ্ট ও সাধারণ মানুষের বারবার অভিযোগের পর রেস্তোরাঁগুলোয় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

হেরাতে নৈতিকতা–বিষয়ক বিভাগের প্রধান আজিজুর রহমান আল মুহাজির বলেন, ‘এসব জায়গা আসলে পার্কের মতো। তবে এগুলোয় রেস্তোরাঁ নাম দেওয়া হয়েছে। সেখানে নারী ও পুরুষ একসঙ্গে কাজ করছেন। এখন এগুলোর নাম সংশোধন করা হয়েছে। আমাদের নিরীক্ষকেরা নারী ও পুরুষ একসঙ্গে যান—এমন পার্কগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন।’

২০২১ সালের আগস্ট মাসে ক্ষমতা দখলের পর থেকে তালেবানের এটি সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা। তালেবান ষষ্ঠ শ্রেণির পর নারীদের পড়াশোনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের পড়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন চাকরি করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পার্ক, ব্যায়ামাগারের মতো জনসমাগমস্থলে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে, নারীদের চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে ৩ হাজার ৩০০ নারী ও পুরুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফগানিস্তানে নারীদের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নারীদের নেতৃত্বে আসার ব্যাপারে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। পুরুষের সঙ্গে কাজ ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

এ বছরের ২৩ মার্চ সব স্কুল খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালেবান। তবে তার বদলে সেদিন তালেবান মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেয়। এসব স্কুল আবার কবে খুলবে বা নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকাল চলবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।