ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস আগামী সপ্তাহে তাঁর ইন্দোনেশিয়া সফরে রাজধানী জাকার্তায় ঐতিহাসিক ইসতিকলাল মসজিদ পরিদর্শনে যাবেন। একটি সুড়ঙ্গের (টানেল) মাধ্যমে নগরীর ক্যাথলিক ক্যাথেড্রালের সঙ্গে এ মসজিদের সংযোগ রয়েছে।
এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১২ দিনের সফরে পোপ আন্তধর্মীয় সম্প্রতি জোরদার করার অংশ হিসেবে জাকার্তায় ওই মসজিদটি পরিদর্শনে যাবেন।
স্থাপত্য নৈপুণ্যের অপূর্ব নিদর্শন ইসতিকলাল মসজিদের সঙ্গে ‘আওয়ার লেডি অব দ্য আজাম্পশন’ ক্যাথেড্রালের সংযোগ স্থাপনকারী সুড়ঙ্গ ‘টানেল অব ফ্রেন্ডশিপ’ ২৮ দশমিক ৩ মিটার দীর্ঘ। ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে ২০২০ সালে ইন্দোনেশিয়া সরকার সুড়ঙ্গটি নির্মাণ করে। গত ১১ বছরের শাসনকালে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান গুরু পোপ ফ্রান্সিসও তাঁর বিভিন্ন সফরে আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা বিষয়ে জোর দিয়ে আসছেন।
স্থাপত্য নৈপুণ্যের অপূর্ব নিদর্শন ইসতিকলাল মসজিদের সঙ্গে ‘আওয়ার লেডি অব দ্য আজাম্পশন’ ক্যাথেড্রালের সংযোগ স্থাপনকারী সুড়ঙ্গ ‘টানেল অব ফ্রেন্ডশিপ’ ২৮ দশমিক ৩ মিটার দীর্ঘ। ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে ২০২০ সালে ইন্দোনেশিয়া সরকার সুড়ঙ্গটি নির্মাণ করে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া সফরে পোপ ফ্রান্সিস (৮৭) মঙ্গলবার জাকার্তায় পৌঁছাবেন। এর মধ্য দিয়ে এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ওই দীর্ঘতম সফর শুরু করছেন তিনি। সফরে পাপুয়া নিউগিনি, ইস্ট তিমুর ও সিঙ্গাপুরেও যাবেন তিনি। তবে এ দীর্ঘ সফর তাঁর ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্যসমস্যা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ক্যাথলিক খ্রিষ্টানপ্রধানের এখানে আসা হবে অসাধারণ একটি ঘটনা।নসরুদ্দিন উমর, ইসতিকলাল মসজিদের প্রধান ইমাম
ইসতিকলাল মসজিদ পরিদর্শনকালে একটি আন্তধর্মীয় বৈঠকে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে পোপ ফ্রান্সিসের। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় এ মসজিদ ছাড়াও ক্যাথেড্রালের সঙ্গে এটির সংযোগ স্থাপনকারী সুড়ঙ্গটি পরিদর্শন করবেন তিনি।
পোপের এ পরিদর্শন কর্মসূচি প্রসঙ্গে মসজিদটির প্রধান ইমাম নসরুদ্দিন উমর বলেন, ‘ক্যাথলিক খ্রিষ্টানপ্রধানের এখানে আসা হবে অসাধারণ একটি ঘটনা।’ বড় কোনো আয়োজনে গির্জায় আসা ব্যক্তিদের জন্য মসজিদটির সুপ্রশস্ত গাড়ি রাখার স্থানকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে নসরুদ্দিন উমর বলেন, ‘আপনার ধর্ম যা–ই হোক, আমাদের উচিত অতিথিদের সম্মান করা।’
ইন্দোনেশিয়ার ২৮ কোটি জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ ক্যাথলিক আর ৯০ শতাংশ মুসলিম। দেশটিতে সফরকালে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে পোপের বৈঠক করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া জাকার্তা স্টেডিয়ামে এক গণ–অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে তাঁর। অনুষ্ঠানটিতে ৮০ হাজারের বেশি লোক যোগ দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন ইন্দোনেশিয়ার চার্চের কর্মকর্তা থমাস উলুন ইসমোয়ো।
পোপের এ সফর নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। গত তিন দশকের বেশি সময়ে দেশটিতে কোনো পোপের এটিই হবে প্রথম সফর।
এর আগে ইন্দোনেশিয়ায় দুজন পোপ সফর করেছেন। তাঁদের মধ্যে পোপ ষষ্ঠ পল ১৯৭০ সালে ও পোপ দ্বিতীয় জন পল ১৯৮৯ সালে দেশটি সফর করেন।