বিয়ে না করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্ট একটি ফৌজদারি আইন পাস করেছে। সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনে আজ মঙ্গলবার আইনটি পাস হয়। এ আইনের আওতায় দেশটিতে ভ্রমণ করতে যাওয়া অবিবাহিত বিদেশি পর্যটকেরাও পড়বেন।
এ ছাড়া ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় প্রেসিডেন্ট কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমাননা এবং ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় আদর্শবিরোধী যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে ইন্দোনেশিয়ায় নতুন এ আইন এখনই কার্যকর হচ্ছে না। আইনের বিধিবিধান তৈরি করতে আরও তিন বছর লেগে যেতে পারে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ হলেও নিজেদের সম্মতিতে বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্কে বাধা নেই।
দেশের অর্থনীতিতে নতুন এ আইনের নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন ইন্ডাস্ট্রি বোর্ডের উপপ্রধান মাওলানা ইউসরান বলেন, ‘দেশটির অর্থনীতি ও পর্যটন খাত যখন করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে, সেই সময় এই নতুন বিধান উৎপাদন খাতের পুরোপুরি বিরোধী।’
ইউসরান আরও বলেন, ‘সরকার তাদের চোখ বন্ধ করায় আমরা খুবই হতাশ। এই আইন কতটা ক্ষতিকর, সে সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’
ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র বালি দ্বীপ। প্রতিবছর প্রচুর বিদেশি ছুটি কাটাতে এখানে আসেন। করোনার প্রভাব কাটিতে উঠতে শুরু করা এ দ্বীপে ২০২৫ সাল নাগাদ আগের অবস্থায় পৌঁছাতে পারে, অর্থাৎ এখানে ৬০ লাখ পর্যটক আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়া তাদের ভিসা প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার মধ্য দিয়ে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উপকূলে তথাকথিত ‘ডিজিটাল যাযাবর’খ্যাত পর্যটকদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
নতুন আইনের বিষয়ে রাজধানী জাকার্তায় ইউএস-ইন্দোনেশিয়া ইনভেস্টমেন্টে ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুং কিম বলেন, ‘নতুন এ আইনের ফলে বিদেশি বিনিয়োগ কমতে পারে। পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান এ দেশে পর্যটন ও ভ্রমণ খাতে প্রভাব পড়বে।’
ইন্দোনেশিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলবার্ট এরিস বলেন, নতুন আইনে বলা হয়েছে, মা-বাবা ও অভিযুক্তের স্ত্রী বা স্বামী বা সন্তান অভিযোগ করতে পারবে। বিয়ের সম্পর্ক ও ইন্দোনেশিয়ার মূল্যবোধ রক্ষার উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে। একই সঙ্গে মানুষের গোপনীয়তা রক্ষা করা ও নৈতিকতার পক্ষে ‘বিচারক’-এর ভূমিকা পালনকারী তৃতীয় পক্ষ বা ব্যক্তিদের দূরে রাখাও এর একটি কারণ।