চীন সীমান্তে মিয়ানমারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ফটকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও মানুষজনের যাতায়াতের জন্য এই ফটক গুরুত্বপূর্ণ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি সূত্র আজ রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাল দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা সরকার।
সম্প্রতি চীন সীমান্তে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৭ অক্টোবর থেকে সশস্ত্র তিনটি জাতিগোষ্ঠী জোটবদ্ধভাবে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা শুরুর করার পর দুই পক্ষের মধ্যে এ সহিংসতা শুরু হয়।
‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামের তিন সশস্ত্র গোষ্ঠীর এই জোট সামরিক বাহিনীর কয়েক ডজন নিরাপত্তাচৌকি ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ছোট শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই শহরের নিয়ন্ত্রণ হারানো বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে আর্থিকভাবে কোণঠাসা জান্তার জন্য।
জোটে থাকা তিন সশস্ত্র গোষ্ঠীর একটি হলো মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ)। গোষ্ঠীটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এমন এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আজ এক প্রতিবেদনে বলেছে, রোববার কিন সান কিইয়াত সীমান্ত ফটকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এমএনডিএএ।
প্রতিবেদন আরও জানানো হয়, গত শুক্রবার হামলা শুরু করার পর এমএনডিএএ, আরাকান আর্মি (এএ) ও তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) সশস্ত্র যোদ্ধাদের নিয়ে গড়া এই বিদ্রোহী জোট চীন সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অঞ্চলটির আরও কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এদিকে মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি সূত্রের মাধ্যমে এএফপি জানতে পেরেছে, নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর কিন সান কিইয়াত সীমান্ত ফটকে নিজেদের পতাকাও উত্তোলন করেছে এমএনডিএএ।
চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ কিন সান কিইয়াত ফটক। করোনা মহামারির সময় এই ফটক বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে তা আবার চালু হয়।
কয়েক দিন আগে জান্তা সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন জানান, এ ফটকের সামনে অন্তত ১২০টি পণ্যবাহী ট্রাক জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই নাশকতার জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেন তিনি।
সামরিক শাসন ও সংঘাতের কারণে মিয়ানমারের অর্থনীতি এমনিতেই ধুঁকছে। এর মধ্যে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ এই সীমান্ত ফটকের নিয়ন্ত্রণ হারানোয় শুল্ক ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমে যাবে।