৯৭ বছর বয়সে নির্বাচন করবেন মাহাথির

মাহাথির মোহাম্মদ
 ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের অন্যতম প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ার সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাঁর বয়স এখন ৯৭ বছর। খবর বিবিসির

মাহাথির দুই দশকের বেশি সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা ২২ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে ৯২ বছর বয়সে তিনি আবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। এই দফায় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে তাঁর সরকারের পতন ঘটে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে তিনি পদত্যাগ করেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে মাহাথির এক দফা হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তিনি আবার হাসপাতালে ভর্তি হন। এ দফায় তিনি ছয় দিন হাসপাতালে ছিলেন।

হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে গত ২২ জানুয়ারি মাহাথিরকে আরেক দফায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।

গত আগস্টের শেষ দিকে করোনা সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মাহাথির। গত মাসে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

মাহাথিরের হৃদ্‌রোগের ইতিহাস রয়েছে। তাঁর বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। তবে মাহাথির এখন বলছেন, তিনি নির্বাচন করতে যথেষ্ট সক্ষম।

নির্বাচনে মাহাথিরের জোট জিতলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না, তা বলেননি প্রবীণ এই নেতা।

গতকাল মঙ্গলবার মাহাথির এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিইনি। কারণ, আমরা যদি নির্বাচনে জয়ী হই, কেবল তবেই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর বিষয়টি সামনে আসবে।’

গত সোমবার মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়। দেশটির ক্ষমতাসীন জোটে দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত নেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব।

আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ায় এখন দেশটিতে আগাম নির্বাচন হবে। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্ট বিলুপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মাহাথির ১৯৬৪ সালে প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য হন। গত শতকের আশির দশক থেকে মালয়েশিয়ার দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রূপান্তরের জন্য তাঁকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন রাজনীতি করার পর অবসরে গিয়েছিলেন মাহাথির। পরে নিজ দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা নাজিব রাজাককে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হটাতে মাহাথির অবসর ভেঙে ২০১৮ সালে আবার রাজনীতিতে ফেরেন।

একসময়ের রাজনৈতিক ‘শত্রু’ আনোয়ার ইব্রাহিমের সহায়তায় ২০১৮ সালে নির্বাচনে জিতে মাহাথির আবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন।

নাজিবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিলের বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। ক্ষমতা হারানোর পর দুর্নীতির দায়ে নাজিবের কারাদণ্ড হয়। এদিকে ক্ষমতাসীন জোটের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাহাথির পদত্যাগ করেন।