যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তালেবান নেতাদের বৈঠক হয়েছে। দুই বছর আগে আফগানিস্তানের শাসনভার নেওয়ার পর তালেবানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের এটাই প্রথম আনুষ্ঠানিক সংলাপ। উভয় পক্ষের মধ্যকার দুই দিনের এ বৈঠক কাতারে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল কাহার বালখি গতকাল সোমবার জানান, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ অবরোধ প্রত্যাহার ও বিদেশে জব্দ থাকা আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা মাদক চোরাচালান বন্ধ ও মানবাধিকার ইস্যুতেও আলোচনা করেছেন বলে জানান আবদুল কাহার বালখি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে তালেবান ও ওয়াশিংটন খোলা মনে আলাপ করেছে। একই সঙ্গে আফগানিস্তানের ‘ক্রমাবনিশীল’ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াশিংটন পুনরায় তাদের উদ্বেগ জানিয়েছে।
তালেবানের সঙ্গে দুই দিনের সংলাপে অংশ নেওয়া মার্কিন প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিশেষ প্রতিনিধি টমাস ওয়েস্ট এবং আফগানিস্তানের নারী, কন্যা ও মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত রিনা আমিরি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রিনা আমিরি ‘আটক, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ ও ধর্মীয় আচারের সীমা নির্ধারণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রতিনিধিদলটি মেয়েদের লেখাপড়া ও নারীদের কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি আটক মার্কিনদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। দেশটিতে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। গত বছর দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে (২ কোটি ৩০ লাখ) খাদ্যসহায়তা দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
২০ বছর ধরে মার্কিন সামরিক বাহিনী আফগানিস্তানে ছিল। ২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। এর জেরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পশ্চিমা–সমর্থিত আফগান সরকারের পতন ঘটে। পুনরায় ক্ষমতার দখল নেয় তালেবান।