মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির জন্মদিন ছিল গতকাল বুধবার। সেদিন চুলে ফুল পরে ছবি পোস্ট করায় দেশটির দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী মান্দালে থেকে পুলিশ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ইলেভেন মিডিয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে বলে জানায় এএফপি।
স্থানীয় অন্য একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলের ওই নগরীতে চুলে ফুল পরা অথবা জনসমাগমস্থলে প্রার্থনা করার কারণে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জান্তাপন্থী হিসেবে পরিচিত একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করে ওই ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। বিবিসি স্বাধীনভাবে ওই পোস্টের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী সু চি সব সময় চুলে ফুল পরে থাকেন। তাঁকে তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্দী করে রেখেছে দেশটির জান্তা সরকার। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির নেতৃত্বাধীন দলের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী।
গতকাল বুধবার ছিল সু চির ৭৯তম জন্মবার্ষিকী। শারীরিক নানা জটিলতায় তিনি এখন অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং মানবাধিকার সংগঠন থেকে জান্তা সরকারের কাছে সু চিকে ছেড়ে দেওয়ায় আহ্বান জানানো হলেও তারা সে আহ্বানে এখন পর্যন্ত সাড়া দেয়নি।
সু চিকে তাঁর পরিবার বা অন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর শুধু গত বছরের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সু চির সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
সু চির ছেলে কিম আরিস গত ফেব্রুয়ারিতে এএফপিকে বলেছিলেন, তিনি তাঁর মায়ের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন। চিঠিতে সু চি তাঁর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন এবং তিনি (সু চি) ‘মানসিকভাবে শক্ত’ আছেন।
অভ্যুত্থানের পর সু চিকে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে মামলা করা হয় এবং ওই সব মামলার কয়েকটিতে সু চিকে দোষী সাব্যস্ত করে মোট ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সামরিক আদালতে হওয়া ওই বিচারকে প্রহসন বলেছে নানা মানবাধিকার সংগঠন। তাদের অভিযোগ, সু চিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এটা করা হচ্ছে।