মিয়ানমার জান্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র-ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা

অব্যাহতভাবে সহিংসতা বৃদ্ধি এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে
ফাইল ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সরকারের কর্মকর্তা, কোম্পানি এবং অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। দেশটির ক্রমেই গভীর হওয়া সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে এসব পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন অধিকারকর্মীরা। খবর আল-জাজিরার।

এক মন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি এবং আরও ১৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউ এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইউরোপিয়ান কাউন্সিল বলেছে, দুই বছর আগে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর অব্যাহতভাবে সহিংসতা বৃদ্ধি এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র ব্যবসায়ী কিয়াও মিন উও এবং অ্যাভিয়েটর কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কিয়াওয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিদেশি উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের মিয়ানমার সফরের আয়োজনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।

এতে আরও বলা হয়, স্কাই অ্যাভিয়েটর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর পক্ষে উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ আমদানিসহ অস্ত্র চুক্তিতে সহযোগিতা করেছে।

জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। অং সান সু চির ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক লিগের (এনএলডি) সরকারকে উৎখাতের পর দেশটি সংকটে পড়ে।

সামরিক বাহিনীর শাসন ব্যাপক সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে। নির্মম কায়দায় তার জবাব দেয় সেনাবাহিনী। পর্যবেক্ষক সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস বলছে, গত ২ বছরে ২ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক একটি সংস্থা জানিয়েছে।

ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছেন সামরিক বাহিনী ও স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাউন্সিলের (এসএসি) সদস্যরা। সামরিক বাহিনী দেশ পরিচালনায় এই পরিষদ গঠন করেছিল। পাশাপাশি বিচার বিভাগ ও কারা পরিষেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

সামরিক বাহিনীর জন্য অস্ত্র কেনার সঙ্গে জড়িত থাকায় তাই জা ও অং মায়ো মিন্টকেও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সামরিক বাহিনীকে অর্থায়ন, রোহিঙ্গা নিপীড়নের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং অস্ত্র কেনায় মধ্যস্থতা করায় নাইং তুত অংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারির পর নতুন করে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। সব মিলিয়ে মিয়ানমারের ৮৪ ব্যক্তি এবং ১১ প্রতিষ্ঠান ইইউর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ল। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কেউ ইউরোপের ভিসা পাবেন না এবং ইউরোপে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে।