কন্যাসন্তানের সুন্দর চেহারা দেখে ভিয়েতনামি বাবা কোনোভাবে মেলাতে পারছিলেন না। মা–বাবা কারও সঙ্গে তার চেহারার মিল নেই। এতে সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন বাবা। তিনি কন্যার আর তাঁর ডিএনএ পরীক্ষা করান। তাতে দেখা যায়, সত্যিই তিনি এই কন্যার বাবা নন।
ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। একসময় কাজের খাতিরে স্ত্রী হং আর শিশুকন্যা ল্যানকে নিয়ে ভিয়েতনামের দক্ষিণের শহর হো চি মিনে বসবাস শুরু করেন ওই ব্যক্তি। শিশুকন্যার বয়স তখন ছিল মাত্র তিন বছর।
কন্যাশিশু ধীর ধীরে বড় হতে থাকে। একসময় যখন বুঝতে পারেন, এই সন্তান তাঁর নয়; তখন স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে ওই ব্যক্তির দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। তিনি প্রায়ই বাসায় আসতেন মাতাল হয়ে।
এক রাতে মাতাল অবস্থায় বাসায় ফিরে ওই ব্যক্তি স্ত্রীর মুখোমুখি হন। তিনি তাঁকে ডিএনএ পরীক্ষার কথা জানান। স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক আছে বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।
স্বামীর এমন কঠিন সত্য আর অভিযোগ মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী। রাগে–ক্ষোভে তিনি সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান। এই দম্পতির সন্তানকে তখন অন্য একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে হয়। সেখানেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। সেখানে ওই মা আর তাঁর মেয়ে অন্য এক মেয়ের দেখা পান।
বিদ্যালয়ে শিশু ল্যানের সঙ্গে আরেকটি কন্যাশিশুর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তার জন্মতারিখ আর ল্যানের জন্মতারিখ একই। আবার দুজনের জন্মও একই হাসপাতালে।
একই দিনে জন্মতারিখ হওয়ায় দুজনের যৌথভাবে জন্মদিনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ওই মেয়ের মা ল্যানকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান। ল্যানের সঙ্গে তাঁর তরুণ বয়সের চেহারার অনেক মিল।
ওই মেয়েটির মায়ের অনুরোধে ল্যানের মা হং ডিএনএ পরীক্ষা করাতে রাজি হন। সেই ডিএনএ পরীক্ষায় ধরা পড়ে, জন্মের সময় হাসপাতালেই দুই শিশু অদল–বদল হয়ে গেছে। হাসপাতালের কর্মীদের অবহেলায় নাকি অন্য কোনো কারণে হলো, সেটা অবশ্য এখনো পরিষ্কার নয়।
এখন দুই পরিবার নিয়মিত একসঙ্গে সময় কাটায়। দুই পরিবারই একমত হয়েছে, দুই কন্যাসন্তান আরও বড় হলে যথাসময়ে তাদের আসল সত্য জানানো হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুই পরিবার কোনো আইনি ব্যবস্থা নেবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।