বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন ও বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করতে মন্ত্রী নিয়োগ দেন। কিন্তু বিশ্বে কোথাও এত দিন কফিবিষয়ক মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি পাপুয়া নিউগিনির সরকার দেশের কফি আরও জনপ্রিয় করে তুলতে একজন মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে। এই মন্ত্রীর কাজ হবে কফিবিষয়ক নানা কিছু দেখভাল করা। দেশটির সরকারপ্রধান বলেছেন, চলতে-ফিরতে, ঘুমানো, আড্ডা—সবখানে কফি নিয়ে তাঁকে ব্যস্ত থাকতে।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে শুধু কফির বিষয়টি দেখতে মন্ত্রী পদে নিয়োগের ঘটনা এটাই প্রথম। এ মাসে বিতর্কিত এক নির্বাচনে জয়ী হয়ে পাপুয়া নিউগিনির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন জেমস মারাপ্পে। গত মঙ্গলবার তিনি নতুন মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় নতুন দুটি পদ আলোচনায় এসেছে। এর একটি হচ্ছে, কফিমন্ত্রী ও আরেকটি পাম তেলবিষয়ক মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপ্পে বলেছেন, দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করার নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই তিনি এ দুটি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী নিয়োগ করেছেন।
কফি ও পাম তেল পাপুয়া নিউগিনির দুটি শীর্ষ রপ্তানি পণ্য। এর মধ্যে কফিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দেশটির কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক উপমন্ত্রী জো কুলি। পাম তেলবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পার্লামেন্ট সদস্য ফ্রান্সিস মানেকে।
প্রধানমন্ত্রী মারেপ্পে বলেন, ‘গত তিন–চার দশকে পাপুয়া নিউগিনির প্রচলিত শস্যগুলো গুরুত্ব হারিয়েছে। আমরা সেগুলো আবার আলোচনায় ফিরিয়ে আনতে চাই। এগুলোকে নির্দিষ্ট মন্ত্রীর অধীনে ভাগ করা হচ্ছে, যাতে সেগুলো ক্ষুদ্র স্তরে ঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায়।’
২০০৮ সাল থেকে পাপুয়া নিউগিনির প্রধান কৃষি রপ্তানির শীর্ষে রয়েছে পাম তেল। এ পণ্য থেকে ২৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার রপ্তানি আয় করে দেশটি যা দেশটির মোট কৃষি রপ্তানির ৪০ শতাংশ। দেশটির কৃষি রপ্তানি পণ্যের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কফি। দেশটিতে ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জিডিপির ৬ শতাংশ জোগান আসে এ পণ্য থেকে।
বর্তমানে দেশটির কফিশিল্প চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী মারাপ্পের আশা, নতুন কফিমন্ত্রী নিয়োগে এ পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে। কারণ, নতুন মন্ত্রী জো কুলি কফির জন্য বিখ্যাত ওয়াঘি ভ্যালি অঞ্চলের লোক। তিনি বলেন, জো কুলির অন্য কোনো কাজ থাকবে না। সেরা কফি পান করানোই হবে তাঁর কাজ। তাঁকে ঘুমাতে, চলতে–ফিরতে, কথা বলতে শুধু কফির বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বলা হয়েছে।’