উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের হাত ধরা অবস্থায় একটি মেয়ের ছবি প্রকাশ করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ। গতকাল শুক্রবার উত্তর কোরিয়া আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। ছবিতে দেখা গেছে, উন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ দেখছেন। তাঁর হাত ধরে আছে একটি মেয়ে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের
আজ শনিবার কেসিএনএ ওই ছবি প্রকাশ করেছে। তবে কেসিএনএ ওই ছবিতে থাকা মেয়েটির নাম জানায়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মেয়েটি উনের। এএফপির প্রতিবেদনেও মেয়েটি উনের বলে জানানো হয়েছে।
গতকাল উত্তর কোরিয়া একটি হোয়াসং-১৭ আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালিয়েছে।
কেসিএনএ-তে প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা গেছে, সাদা কোট পরা মেয়েটি উনের হাত ধরে আছে এবং ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে তাকিয়ে আছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিন্তক প্রতিষ্ঠান স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরীয় নেতৃত্ববিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেন বলেন, ‘এটি প্রথম কোনো অনুষ্ঠান, যেখানে আমরা কিম জং–উনের মেয়েকে প্রকাশ্যে আসতে দেখলাম।’
বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, কিম জং–উনের তিনটি সন্তান আছে। তাদের মধ্যে দুজন মেয়ে ও একজন ছেলে। পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস, সেপ্টেম্বরে জাতীয় একটি ছুটির দিন উদ্যাপন অনুষ্ঠানেও এ তিন সন্তানের একজনকে দেখা গিয়েছিল।
২০১৩ সালে অবসরপ্রাপ্ত আমেরিকান বাস্কেটবল তারকা ডেনিস রডম্যান বলেছিলেন, ‘জু এই’ নামে উনের একটি কন্যাসন্তান আছে। ওই বছর উত্তর কোরিয়া সফরের পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রডম্যান বলেছিলেন, তিনি কিম উন ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন এবং শিশুটিকে কোলে নিয়েছেন।
ম্যাডেন মনে করেন, বর্তমানে জু এইয়ের বয়স ১২-১৩–এর মতো হবে। চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করবে, নয়তো সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। ভবিষ্যতে তাকে কেন্দ্রীয় নেতা কিংবা উপদেষ্টা হওয়ার মতো করে প্রস্তুত করা হতে পারে। কিংবা সে উনের বোনের মতো নেপথ্যে থেকেও ভূমিকা পালন করতে পারে।
নেতৃত্ব থেকে কিম জং–উন সরে গেলে তাঁর বিকল্প কে হবেন, তা উত্তর কোরিয়া ঘোষণা করেনি। তাঁর সন্তানদের ব্যাপারেও খুব একটা তথ্য প্রকাশ পায়নি বললেই চলে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, উনের সন্তানেরা নেতৃত্ব গ্রহণের মতো যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত এই নেতার বোন এবং বিশ্বস্ত সহযোগীরা দায়িত্বপালন করবেন।
রয়টার্স ও এএফপির খবর বলছে, গতকাল ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের অনুষ্ঠানে কিম উনের স্ত্রী রি সোল জুকেও দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএনএ-এর উত্তর কোরীয় নেতৃত্ববিষয়ক বিশেষজ্ঞ কেইন গাউস মনে করেন, রি সোল জু যখনই প্রকাশ্যে হাজির হন, তখনই সেখানে কোনো কৌশলগত বার্তা থাকে। সাধারণত উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টায়, কোনো আক্রমণাত্মক বার্তা (ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে) প্রতিহত করতে কিংবা অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে গুঞ্জন চলার মধ্যে পারিবারিক ঐক্য প্রকাশ করতে তিনি হাজির হয়ে থাকেন।