শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে বিশেষ এক সরকারি প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ৪০ (১) (সি) অনুচ্ছেদের আওতায় রনিল বিক্রমাসিংহে এ জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আজ সোমবার থেকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জননিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলার সুরক্ষা এবং মানুষের জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও সেবা বজায় রাখার স্বার্থে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলো।
গত বছরের শেষ দিক থেকে শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সমস্যা তীব্র হতে শুরু করে। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের চরম সংকটে পড়ে দেশটি। এমন অবস্থায় দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের মুখে গত ৯ মে মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী করেন তখনকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন না হওয়ায় প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে।
বিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন গোতাবায়া। প্রথমে মালদ্বীপ এবং সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে চলে যান তিনি। স্পিকারের কাছে ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন গোতাবায়া। গত শুক্রবার শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে সে পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়।
গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। কিন্তু প্রবীণ এই রাজনীতিবিদকে বিক্ষোভকারীরা রাজাপক্ষে পরিবারের অনুগত মনে করেন। রাজাপক্ষে পরিবারের চার ভাই বছরের পর বছর ধরে দ্বীপরাষ্ট্রটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করছিলেন।
গোতাবায়ার পদত্যাগের পর বিক্ষোভ থেকে কিছুটা সরে এসেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা দখলে থাকা তিনটি প্রধান রাষ্ট্রীয় ভবন খালি করে দিয়েছেন। বিক্রমাসিংহে সামরিক বাহিনী ও পুলিশকে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার, তা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আগামী বুধবার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ভোটাভুটি হবে। প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে আগ্রহীদের কাল মঙ্গলবারের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।