পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ এক দিনে অন্তত ৩৮ জন নিহত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তবে এ জন্য বড় কোনো অভিযান পরিচালনা করা হবে না বলে জানান তিনি।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ওই হামলায় অন্তত ৩৮ জন শহীদ হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সন্ত্রাসী এবং তারা বেলুচ নয়।
সন্ত্রাসী হামলার পরই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে ২১ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। প্রাণ হারান নিরাপত্তা বাহিনী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ১৪ সদস্য।
আগের দিন রোববার রাতে বেলুচিস্তান প্রদেশের মাস্তুং, কালাত, পাসনি ও সুনসার জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। প্রদেশটির রাজধানী কোয়েটাসহ সিবি, পঞ্জগুর, মাস্তুং, তুরবত ও বেলা শহরে সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং গ্রেনেড হামলা চালায়। গোয়াদর জেলায় সুনসার থানায় হামলা চালিয়ে অস্ত্রও লুট করে সন্ত্রাসীরা।
জিও নিউজকে পুলিশ বলেছে, হামলার এক ঘটনায় যাত্রীবাহী বাস থেকে নামিয়ে অন্তত ২৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। বেলুচিস্তানের মুসাখাইলের রারাশাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মুখ্যমন্ত্রী বুগতি বলেন, প্রাদেশিক সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা জোরদারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদকে উৎখাত করবে। বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী হওয়ার সক্ষমতা নেই। তাদের বিরুদ্ধে গতিশীল ও চৌকসভাবে এগিয়ে যাবে সরকার। তিনি নিশ্চিত করেন যে এখন বড় ধরনের কোনো অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন নেই। গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক অভিযান চালানোর মধ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা সীমিত করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা এবং সরকারবিরোধী অপপ্রচার বেড়ে যাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। বেলুচিস্তানের তরুণদের সন্ত্রাসী অপপ্রচারে অংশ না নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সন্ত্রাসী হামলার পরই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে ২১ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। প্রাণ হারান নিরাপত্তা বাহিনী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ১৪ সদস্য।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের ক্ষুব্ধ বেলুচ নাগরিক বলার সুযোগ নেই; যাদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। আমরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করব। কিন্তু সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।’
বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) নামের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।