মাঝ আকাশে উড়োজাহাজের দরজা খোলায় দক্ষিণ কোরিয়ায় এক যাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে এশিয়ানা এয়ারলাইনসের এক ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটেছে। ফ্লাইটটিতে ১৯৪ যাত্রী ছিলেন। দেশটির জেজু দ্বীপ থেকে দায়েগু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাচ্ছিল উড়োজাহাজটি। যাত্রীদের নিয়ে নিরাপদে উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, উড়োজাহাজের দরজা খোলা দেখে যাত্রীদের কেউ কেউ অচেতন হয়ে পড়েন। কারও কারও শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়। উড়োজাহাজ অবতরণের পরই তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানায়, শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টায় জেজু দ্বীপ থেকে উড্ডয়ন করে উড়োজাহাজটি। এর প্রায় এক ঘণ্টা পরের ঘটনা এটি। উড়োজাহাজটি তখন বিমানবন্দরে অবতরণ করছিল। এমন সময় এক যাত্রী জরুরি বহির্গমন দরজা খোলেন। উড়োজাহাজটি তখনো রানওয়ে থেকে আড়াই শ মিটার উঁচুতে ছিল।
ঘটনার দৃশ্য ধারণ করেছিলেন এক যাত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, উড়োজাহাজের বাঁ দিকের ফাঁকা জায়গা ও যাত্রীদের সারি দিয়ে বাতাস বয়ে যাচ্ছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, যখন ওই ব্যক্তি উড়োজাহাজের দরজা খুলছিলেন, তখন তাঁকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন ক্রু সদস্যরা। তবে উড়োজাহাজটি অবতরণ করছিল বলে তাঁরা ওই যাত্রীকে থামাতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দরজা খোলার পর ওই যাত্রী উড়োজাহাজ থেকে লাফ দেওয়ারও চেষ্টা করেন।
হঠাৎ উড়োজাহাজের দরজা খোলায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই ফ্লাইটে থাকা ৪৪ বছর বয়সী এক যাত্রী বললেন, ‘এটা ছিল পুরোই এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। যাত্রীদের মধ্যে যাঁরা দরজার পাশে বসা ছিলেন, তাঁরা এ ঘটনা দেখে একে একে অচেতন হয়ে যেতে থাকেন। এ সময় উড়োজাহাজের স্পিকারের মাধ্যমে যাত্রীদের কেউ চিকিৎসক কি না, তা জানতে চান ক্রু সদস্যরা।’
ওই যাত্রী আরও বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল, উড়োজাহাজটি বিস্ফোরিত হয়ে যাবে। তখন আমার মনে হচ্ছিল, এভাবেই বুঝি আমি মারা যাব।’
ওই ফ্লাইটে স্কুলপড়ুয়া বেশ কিছু শিশুও ছিল। খেলাধুলার এক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দায়েগু যাচ্ছিল তারা। এই শিশুদের মধ্যে একজনের মা বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপকে বলেন, ‘বাচ্চাগুলো ভয় আর আতঙ্কে মুষড়ে গিয়ে কাঁদছিল।’
উড়োজাহাজের দরজা খোলা ওই যাত্রীর বয়স ৩০-এর কোঠায়। উড়োজাহাজ অবতরণের পরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ বলছে, কেন দরজা খুলেছিলেন, এখনো তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি ওই যাত্রী। তবে গ্রেপ্তারের সময় তিনি মাতাল ছিলেন না।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা বলা যাচ্ছে না। তিনি কেন এ কাজ করতে গেলেন, তা আমরা তদন্ত করে দেখব এবং এর জন্য তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে।’