আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে সেলুনে দাড়ি কামানো বা ছেঁটে ফেলা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। তারা বলেছে, এটা তাদের ইসলামি আইনের ব্যাখ্যার লঙ্ঘন। আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
হেলমান্দে তালেবানের ধর্মীয় পুলিশ বলেছে, কেউ এ নিয়ম লঙ্ঘন করলে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে। রাজধানী কাবুলের কিছু নরসুন্দর বলেছেন, তাঁরাও একই ধরনের আদেশ পেয়েছেন।
দক্ষিণ হেলমান্দ প্রদেশের সেলুনগুলোয় সাঁটানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তালেবান কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে চুল ও দাড়ির ব্যাপারে নরসুন্দরদের অবশ্যই শরিয়াহ আইন মেনে চলতে হবে। এ ব্যাপারে কারও কোনো অভিযোগ করার সুযোগ নেই।
কাবুলের এক নরসুন্দর বলেন, তালেবান যোদ্ধারা তাঁদের সেলুনে আসছেন। তাঁরা নরসুন্দরদের দাড়ি ছাঁটা বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছেন। তালেবান যোদ্ধাদের একজন বলেছেন, তাঁরা নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের ধরার জন্য গোপন–পরিদর্শক পাঠাতে পারেন।
শহরটির অন্যতম বড় একটি সেলুন পরিচালনাকারী আরেক নরসুন্দর বলেন, তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে ফোন পেয়েছেন। সেই কর্মকর্তা তাঁকে সেলুনে আমেরিকান স্টাইল অনুসরণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘কারও দাড়ি কামাবেন না বা দাড়ি ছেঁটে ফেলবেন না।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান যখন প্রথম ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা স্টাইল করে চুল কাটা নিষিদ্ধ করেছিল। এ ছাড়া পুরুষদের দাড়ি রাখার ব্যাপারে জোর দিয়েছিল।
তালেবান এবার ক্ষমতা দখলের পর বলেছিল যে তারা অতীতের মতো কট্টরপন্থায় দেশ চালাবে না। কিন্তু তালেবানের কার্যক্রমের সঙ্গে তাদের কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে না।
গত মাসে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে। চলতি মাসের শুরুর দিকে তারা সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়।
গত শনিবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হেরাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চার অপহরণকারী নিহত হয়। তারপর তাদের লাশ ক্রেনে ঝুলিয়ে রেখে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরায় তালেবান। তালেবানের ক্ষমতা নেওয়ার পর আফগানিস্তানে এটাই ছিল প্রথম কঠোরতম কোনো শাস্তির ঘটনা।
বিবিসি বলছে, এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে এমনটা মনে করা হচ্ছে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান ক্ষমতায় থাকার সময় যে কট্টরপন্থা অবলম্বন করেছিল, তারা এখন আবার তা বহাল করবে।