ধূলিঝড় যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা দেখা গেল গতকাল বুধবার। মধ্যপ্রাচ্যে বয়ে যাওয়া ওই ঝড় আঘাত হানে সংযুক্ত আরব আমিরাতেও। এতে দেশটির জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়। ধূলিঝড়ের কারণে ধুলায় ছেয়ে যায় চারপাশ। এতে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা কিছু সময়ের জন্য চোখের আড়ালে চলে যায়। খবর এএফপির।
দুবাইয়ে অবস্থিত বুর্জ খলিফার উচ্চতা ৮২৮ মিটার (২ হাজার ৭১৬ ফুট ৬ ইঞ্চি)। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন হিসেবে পরিচিত। এটি সাধারণত সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র। আশপাশের অনেক এলাকা থেকে এটি খালি চোখেই দেখা যায়। তবে গতকালের ওই ধুলার ঝড়ের সময় মনে হচ্ছিল বুর্জ খলিফার ওপরে কেউ ধুলার আস্তরণ বিছিয়ে দিয়েছে।
কয়েক দিন ধরে ইরাক, কুয়েত, সৌদি আরব, ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ধূলিঝড় বয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ ধূলিঝড়ের গতিপথ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে। ঝড় আসার খবরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অনেক বিমানবন্দর, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ঝড়ের কবলে পড়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা নিয়ে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ওয়াকি ডটইনফো ও প্লাম পলিউশন অ্যাপের তথ্য অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির বায়ুর মান সূচক (একিউআই) ধূলিঝড়ের কারণে রাতারাতি অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায়।
মধ্যপ্রাচ্যের ধূলিঝড় এখন আরও ঘন ঘন এবং তীব্র হয়ে উঠছে। এ প্রবণতার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত ঘাস কেটে ফেলা, বন উজাড়, নদীর পানির অত্যধিক ব্যবহার এবং বাঁধের নির্মাণকে দায়ী করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন আঞ্চলিক আবহাওয়ার ধরনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। মরুকরণের ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। আমিরাতের কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী সতর্কতা জারি করে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বাতাস ও ধূলিঝড়ে দৃশ্যমান কমে যাওয়ায় গাড়িচালকদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানায় আবুধাবি পুলিশ।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর মেটিওরোলজির গ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, আরব আমিরাতজুড়ে ঝড় বইছে। বিপজ্জনক আবহাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তাই জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে। ঘণ্টায় ঝড়ের গতি ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে।
দুবাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমান চলাচলে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে আবহাওয়া আরও কয়েক দিন এমন থাকতে পারে। পাশের দেশ সৌদি আরবেও গত মঙ্গলবার ধুলার ঝড় বয়ে যায়। গতকাল রাজধানী রিয়াদে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। রিয়াদের হাসপাতালগুলোতে এক হাজার ২৮৫ জন শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, ধুলার ঝড় আসির, নাজরান, হায়েল ও মদিনা শহরেও আঘাত হেনেছে। আগামী রোববার নাগাদ আরেকটি ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।