ফিলিস্তিনের গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বলেছেন, সংগঠন হিসেবে পুরো হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করতে একটি পথ খুঁজছেন তিনি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে হামাসের সামরিক শাখাকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। এবার সংগঠনটির রাজনৈতিক শাখাকেও সন্ত্রাসীর তকমা দেওয়ার পথে হাঁটছে দেশটি।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, প্রীতি প্যাটেলের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সরকার যদি এই সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত এবং নিষিদ্ধ করে, তবে এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া, সমর্থন করা, ওই সংগঠনকে সমর্থন করে এমন পোশাক পরা ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে। এমন অপরাধের সাজা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড কিংবা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করতে একটি প্রস্তাব আগামী শুক্রবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে। এরপর তা নিয়ে আলোচনা হবে এবং এরপর অনুমোদন সাপেক্ষে ২৬ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ১৯৯৫ সালে। প্রীতি প্যাটেল বলেন, মিত্রদের সঙ্গে মিল রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
প্রীতি প্যাটেল যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে এক বক্তৃতায় এই পদক্ষেপের ঘোষণা দেন। ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধীরেই যুক্তরাজ্যকে এমন পদক্ষেপ নিতে চাপ দিয়ে আসছে। বিবিসি বলছে, এই সিদ্ধান্ত ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে ইসরায়েলের গভীর সম্পর্কের প্রতিফলন।
ইসরায়েল যুক্তরাজ্যের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিড বলেন, ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের কোনো বৈধ শাখা থাকে না। তাই সন্ত্রাসী সংগঠনের বিভিন্ন শাখার মধ্যে পার্থক্য করার যেকোনো প্রচেষ্টা কৃত্রিম।’ ২০০১ সালের হামাসের সামরিক শাখাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে যুক্তরাজ্য।
১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হামাসের রয়েছে রাজনৈতিক ও সামরিক শাখা। ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও ইসরায়েলের সঙ্গে যেকোনো শান্তি আলোচনার বিরোধী হামাস। আলোচনার বদলে সশস্ত্র এই সংগঠন ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড দখল করা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনে বিশ্বাসী। এর পক্ষে প্রচারণা চালায় তারা।
হামাসের হুমকির কারণে ২০০৭ সালে গাজার ওপর অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। চলতি বছরের মে মাসে এই দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে আড়াই শ জনের বেশি ফিলিস্তিনি ও ১৩ জন ইসরায়েলি নিহত হয়।