উত্তর কোরিয়া দেশটির এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটি এ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়।
আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের পর এই প্রথম নিষিদ্ধ আইসিবিএমের পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া।
আইসিবিএম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এ ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম।
আইসিবিএমের পরীক্ষা চালানো উত্তর কোরিয়ার জন্য নিষিদ্ধ। অতীতে এ পরীক্ষা চালানোর জন্য দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের পর আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা স্থগিত রেখেছিল উত্তর কোরিয়া। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার উচ্চপর্যায়ের একাধিক কূটনৈতিক বৈঠককে কেন্দ্র করে এ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা বন্ধ রাখে পিয়ংইয়ং। একই সময় থেকে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষাও বন্ধ রাখে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, গতকাল দেশটির নেতা কিম জং-উনের সরাসরি দিকনির্দেশনায় আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাটি চালানো হয়।
হোয়াসং-১৭ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত এক সামরিক কুচকাওয়াজে প্রথম প্রদর্শন করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটির ‘অতিকায়’ আকৃতি দেশটির অস্ত্র বিশ্লেষকদের পর্যন্ত বিস্মিত করেছিল।
গতকাল উত্তর কোরিয়ার চালানো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর নজরেও এসেছে।
জাপানের কর্মকর্তারা জানান, ক্ষেপণাস্ত্রটি ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে জাপানি জলসীমায় গিয়ে পড়ে।
জাতিসংঘের পাশাপাশি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে আঞ্চলিক উত্তেজনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের উসকানি বলে মন্তব্য করেছেন।
ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেশটির নেতা কিম জং-উনকে উদ্ধৃত করে বলেছে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে পিয়ংইয়ং দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাতবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যকবার উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি।
এর আগে ২০১৯ সালে এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যকবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল দেশটি। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচনা ভেস্তে গেলে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতাপূর্ণ নীতিকে দায়ী করে আসছে।