১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সময় পার করছে শ্রীলঙ্কা। সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে আজ পদত্যাগ করেছেন। ৩১ মার্চ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে তাঁর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করে শত শত বিক্ষোভকারী। এর মধ্য দিয়েই দ্বীপ দেশটিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন দৃশ্যমান হয়। ৩১ মার্চ থেকে ৯ মে পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা সংকটের আলোচিত ঘটনাক্রম তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
৩১ মার্চ: শত শত বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে তাঁর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেন।
১ এপ্রিল: বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় গোতাবায়া দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার ও আটক রাখার ক্ষমতা দেন।
২ এপ্রিল: দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয় এবং সেনা মোতায়েন করা হয়।
৩ এপ্রিল: ওই দিন গভীর রাতে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যই ইস্তফা দেন। এতে গোতাবায়া ও মাহিন্দা কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
৪ এপ্রিল: রাজাপক্ষের সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বিরোধীরা রাজি হয়নি। এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করেন।
৫ এপ্রিল: শপথ নেওয়ার পরপরই অর্থমন্ত্রী আলী সাবরি পদত্যাগ করলে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার সংকট আরও ঘনীভূত হয়। সাবেক মিত্ররা পদত্যাগের আহ্বান জানানোর পর প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান।
৯ এপ্রিল: রাজাপক্ষে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন হাজারো মানুষ।
১০ এপ্রিল: চিকিৎসকেরা জানান, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মজুত প্রায় শেষ। তাঁরা সতর্ক করেন, ওষুধের সংকটে করোনাভাইরাসের চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
১২ এপ্রিল: সরকার ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ খেলাপির ঘোষণা দেয়। অতি প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও শেষের দিকে বলে জানায়।
১৮ এপ্রিল: মন্ত্রিসভার নতুন সদস্য নিয়োগ। তবে নতুন সরকারে নিজের বড় ভাই মাহিন্দাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাখেন গোতাবায়া।
১৯ এপ্রিল: টানা কয়েক সপ্তাহের সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
২৮ এপ্রিল: দেশব্যাপী ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে শ্রীলঙ্কা থমকে যায়। এরপর ৬ মে আবার ধর্মঘট ডাকা হয়। এদিন রাজাপক্ষে আবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
৯ মে: ক্ষমতাসীন দল ও সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের পর অবশেষে মাহিন্দা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।