শ্রীলঙ্কায় সব ধরনের বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপসগুলো বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। আজ রোববার সকাল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে। এদিকে চলমান পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ঠেকাতে দেশটিতে গতকাল শনিবার থেকে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ চলছে। কাল সোমবার সকাল পর্যন্ত তা বজায় থাকবে। খবর দ্য হিন্দুর।
২ কোটি ২০ লাখ অধিবাসীর দেশ শ্রীলঙ্কা প্রচণ্ড অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছে। সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে কয়েক শ মানুষ। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী গুলিবর্ষণ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গতকাল শ্রীলঙ্কার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন বলেছে, আজ (বোববার) থেকে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, টুইটার, আইএমও, ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট ও টিকটক বন্ধ থাকবে। তারা আরও জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।
শনিবার থেকে শ্রীলঙ্কায় কারফিউ ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তিনি বলেন, ‘সড়ক, রেলপথ, পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র কিংবা অন্য জনসমাগমস্থল ও সমুদ্রতীরে কারও উপস্থিতি দেখা যাবে না।’ গতকাল সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হওয়া এ কারফিউ চলবে কাল সকাল ছয়টা পর্যন্ত। ইতিমধ্যে কারফিউ ভাঙার অভিযোগে ৬৬০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট পার করছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানিরও ক্ষমতা হারিয়েছে দেশটি। মারাত্মক অর্থনৈতিক ও জ্বালানিসংকট তৈরি হয়েছে। হাজারো মানুষ ফিলিং স্টেশনের সামনে কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। মুদ্রা বিনিময় সংকটের কারণে আমদানি বিধিনিষেধ থাকায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।
অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ দমনে শনিবার পুরোদমে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে তাদের দেওয়া হয়েছে বিশেষ ক্ষমতা।