চরম আর্থিক সংকটে শ্রীলঙ্কা। ভয়াবহ আর্থিক দুর্দশার প্রতিবাদে দেশটির মানুষ বিক্ষোভ করছেন। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্যের সবাই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও। সংকট সামলাতে সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।
ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কম। এ জন্য জ্বালানিসহ অন্য পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না দেশটি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। মূল্যস্ফীতি মাত্রা ছাড়িয়েছে। বাজারে পণ্য নেই। তাই কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় রাস্তায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভে নেমেছেন।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘জাতীয় এই জরুরি মুহূর্তে সকল নাগরিক ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার সময় এসেছে। পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী সমস্ত রাজনৈতিক দলকে জাতীয় এ সংকট সমাধানের লক্ষ্যে মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে একতাবদ্ধ হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।’
অর্থনীতির এমন দুরবস্থার মধ্যে আজ সোমবার শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অজিথ নিভারদ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে তিনি টুইট করেন, ‘মন্ত্রিসভার সবার পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে আমি আজ গভর্নর হিসেবে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’
আর্থিক দুর্দশার প্রতিবাদে শ্রীলঙ্কার মানুষ বিক্ষোভ শুরু করার পরই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপক্ষে গত শুক্রবার প্রথমে জরুরি অবস্থা ও পরে কারফিউ জারি করেন। এর মধ্যেই আজ সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানালেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া।
চিন্তন প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি অল্টারনেটিভসের নির্বাহী পরিচালক পাইকিয়াসোথি সারাভানামাত্তু রয়টার্সকে বলেন, ‘যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় এবং সরকারে থাকা ব্যক্তিদের ওপর মানুষের কিছুটা আস্থা থাকে তাহলেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু মানুষ তো প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বেশি অসন্তুষ্ট।’
মানুষের ক্ষোভ নিয়ে সারাভানামাত্তু বলেন, ‘রাস্তায় নেমে যাঁরা বিক্ষোভ করছেন, তাঁদের দাবি গোতাবায়া রাজাপক্ষকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনিই এখন লক্ষ্য।’