জ্বালানিসংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় সাধারণ মানুষ ও চালকদের দীর্ঘ সময় পেট্রল স্টেশনে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে
জ্বালানিসংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় সাধারণ মানুষ ও চালকদের দীর্ঘ সময় পেট্রল স্টেশনে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে

শ্রীলঙ্কায় সরকারি কর্মচারীদের সপ্তাহে কর্মদিবস চার দিন হচ্ছে

শ্রীলঙ্কার সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এখন থেকে সপ্তাহে চার দিন কর্মদিবস হতে যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার সরকার সাপ্তাহিক কর্মদিবস কমানোর কথা জানায়। এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশে চলমান জ্বালানিসংকট মোকাবিলা এবং সরকারি কর্মচারীদের চাষাবাদে উৎসাহিত করতে এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি। তবে স্বাস্থ্য, পানি, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ও অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাত এর আওতামুক্ত থাকবে। খবর রয়টার্স ও কলম্বো পেজের।

শ্রীলঙ্কার সরকারি খাতে কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। কিন্তু কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট চলছে দেশটিতে। কয়েক মাস ধরে শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধের মতো জরুরি পণ্যগুলোও আমদানি করতে পারছে না দেশটির সরকার।

শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে অনেকেই জ্বালানির জন্য দীর্ঘ সময় পেট্রলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন থাকতে হচ্ছে তাঁদের। মুদ্রার মান কমে যাওয়া, বিশ্বজুড়ে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও সার আমদানি নিষিদ্ধে (এখন প্রত্যাহার হয়েছে) এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৫৭ শতাংশ।

গতকাল সোমবার শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী তিন মাস সরকারি খাতের কর্মচারীরা শুক্রবার ছুটি পাবেন। কারণ হিসেবে চলমান জ্বালানিসংকটে মানুষের চলাচলে অসুবিধা এবং একই সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের চাষাবাদে উৎসাহিত করতে ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় সরকার।

সরকারের তথ্য বিভাগ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানানো হয়। তাতে বলা হয়, ‘সরকারি কর্মচারীদের ছুটি আরও এক দিন বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। এখন থেকে শনি ও রোববারের সঙ্গে শুক্রবারও সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে গণ্য হবে। এতে করে সরকারি কর্মচারীরা তাঁদের বাড়ির পাশে বা অন্যত্র চাষাবাদের কাজ করার সুযোগ পাবেন, যা দেশে খাদ্যসংকটের একটা সমাধানও হতে পারে।

শ্রীলঙ্কায় মানবিক সংকট আরও খারাপের দিকে যাওয়া নিয়ে গত সপ্তাহে সতর্ক করে জাতিসংঘ বলেছে, চরম সংকটে আছেন এমন ১০ লাখ মানুষকে সাহায্যের লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কাকে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার দেওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা। এ ছাড়া ঋণ ছাড়ের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার আলোচনা চলছে।