তুমুল গণবিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কার অনেক রাজনীতিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছেন—সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তবে ভারত জানিয়েছে, এসব তথ্য নিছক গুজব। এর সত্যতা নেই। খবর এনডিটিভির
কলম্বোয় ভারতীয় হাইকমিশন মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় জানায়, শ্রীলঙ্কার কয়েকজন রাজনীতিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ভারতে পালিয়েছেন—এমন তথ্য সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে বলে হাইকমিশনের নজরে এসেছে। এসব তথ্যের সত্যতা নেই। হাইকমিশন এমন প্রচারণার নিন্দা জানাচ্ছে।
এর আগে শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের নীতিগত অবস্থান জানিয়েছে ভারত। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে দ্বীপরাষ্ট্রের জনগণ যা চাইবেন, ভারত সেই স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট হবে।
করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
সোমবার তুমুল বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তাতেও জনরোষ কমেনি। রাতে হাজারো বিক্ষোভকারী কলম্বোয় রাজাপক্ষের বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা রাজধানীর ‘টেম্পল ট্রিজ’ বাসভবনের মূল দোতলা ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন।
পরে মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই সেনা পাহারায় কলম্বোর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিঙ্কোমালি শহরে একটি নৌঘাঁটিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। ওই নৌঘাঁটিও ঘিরে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের লাগাম টানতে গত শুক্রবার শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। চলছে কারফিউ। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পর তাঁর ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন বিরোধীরা।