মিয়ানমারের রাখাইনে আবারও অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। সংঘাতকবলিত রাজ্যটিতে হামলায় দুই বৌদ্ধধর্মাবলম্বী নিহত এবং দুজন আহত হওয়ার পর এই অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের কার্যালয়। হামলার ঘটনা দুটির একটির জন্য রোহিঙ্গাদের দায়ী করেছে কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনের বৌদ্ধধর্মাবলম্বী দুই ব্যক্তি মাছ ধরে ফিরে না আসার পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরু করে। পরে তাঁদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। একই দিন একই এলাকায় বৌদ্ধধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তির ওপর ছয়জন ‘সশস্ত্র বাংলাভাষী’ হামলা চালায়। ওই দুজন প্রাণে বাঁচলেও তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান
রয়টার্স জানায়, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর দমন-পীড়ন ও হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির কয়েকজন সিনেটর।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির কয়েকজন সদস্য গত বুধবার পম্পেওকে দেওয়া এক চিঠিতে লিখেছেন, ‘পররাষ্ট্র দপ্তরের নিজস্ব প্রতিবেদনেই গণহত্যা চালানোর স্পষ্ট প্রমাণের উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও এই অপরাধকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা আখ্যা না দেওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’ ডেমোক্রেটিক দলের শীর্ষ নেতা সিনেটর বব মেনেন্দেজের নেতৃত্বে ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও ও সুসান কলিনস এবং ডেমোক্রেটিক সিনেটর এক মার্কে, টিম কেইন, বেন কার্ডিন ও জেফ মার্কলে।
রোহিঙ্গা নিপীড়নের তদন্তে অনীহা মিয়ানমারের
ইউএনবি জানায়, মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, রোহিঙ্গাদের ওপর হওয়া নির্মম অপরাধের বিষয়ে তদন্তে অনিচ্ছুক মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। বুধবার এক বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউর এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর হওয়া ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিস্তারিত দলিল প্রস্তুতের পরও মিয়ানমারের কমিশনের তা প্রত্যাখ্যানে পরিষ্কার হয়েছে যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এই কমিশন আন্তরিক নয়।