সৌদি রাজকুমারী রিমা বিন্ত বানদার আল-সৌদ যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন। এই প্রথম সৌদি আরব কোনো নারীকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিল। গতকাল শনিবার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। জনসমক্ষে তাঁর নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়।
রিমা তাঁর শৈশবের কিছু সময় ওয়াশিংটন ডিসিতে কাটিয়েছেন। পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি খুবই কঠিন সময়ে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পেলেন। কারণ, সাংবাদিক জামাল খাসোগির মৃত্যু নিয়ে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেকায়দা অবস্থায় রয়েছে।
গত বছরের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে হত্যার শিকার খাসোগির মৃত্যু নিয়ে একেকবার একেক রকম ব্যাখ্যা দিয়েছে সৌদি আরব। তাদের ব্যাখ্যাগুলোও ছিল সাংঘর্ষিক। মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশ ছাড়া কনস্যুলেট ভবনের মতো জায়গায় এই হত্যা সম্ভব নয়। একসময় সৌদি রাজপরিবারে অবাধে বিচরণ করা এই সাংবাদিক যুবরাজ মোহাম্মদের রোষানলে পড়ে দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছানির্বাসনে চলে যান যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে ওয়াশিংটন পোস্টে তিনি যুবরাজ ও সৌদি শাসনের সমালোচনা করে কলাম লিখতেন। খাসোগি হত্যার ব্যাপারে সিনেট থেকে হোয়াইট হাউসের প্রতি আরও তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। সম্প্রতি কংগ্রেসের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কের অন্যান্য ক্ষেত্র যেমন পারমাণবিক প্রযুক্তি ও ইয়েমেন যুদ্ধের বিষয়েও তদন্ত দাবি করেছে।
রাজকুমারী রিমা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদের ছোট ভাই যুবরাজ খালিদ বিন সালমানের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। খালিদ সৌদি আরবের উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
রিমার বাবা বানদার বিন সুলতান আল-সৌদ ১৯৮৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। রিমা মিউজিয়াম স্টাডিজের বিষয়ে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করেছেন। ২০০৫ সালে দেশে ফিরে তিনি সরকারি ও বেসরকারি দুই খাতেই বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
কট্টরপন্থী দেশটিতে রিমা নারী অধিকারবিষয়ক ইস্যুতে সোচ্চার। খেলাধুলা ও ব্যায়ামে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে সম্প্রতি তিনি সৌদির ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করেছেন। স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে প্রচারের ক্ষেত্রেও দেশজুড়ে তাঁর পরিচিতি রয়েছে।