মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী চলমান বিক্ষোভে আবার রক্ত ঝরল। রোববার দেশটিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনা–পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৭ জন। এর মধ্যে অন্যতম বড় শহর ইয়াঙ্গুনে মারা গেছেন ১৪ বিক্ষোভকারী।
রোববার ইয়াঙ্গুনের পশ্চিমাঞ্চলীয় হ্লিংথায়া জেলায় বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। স্থানীয় হাসপাতাল ও উদ্ধারকর্মীদের বরাতে দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ ঘটনায় অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এমআরটিভির খবরে বলা হয়েছে, হতাহতের ঘটনার পরে এ জেলায় সামরিক আইন জারি করা হয়েছে। তবে রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জান্তা সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মিলেনি।
ইয়াঙ্গুনের এ জেলা ছাড়াও রোববার মিয়ানমারে আরও কয়েকটি শহরে বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এসব ঘটনায় মারা গেছেন আরও অন্তত তিনজন।
এদিকে মিয়ানমারে চীনা দূতাবাস দেশটিতে তাদের নাগরিক ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জান্তা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে চীনা বিনিয়োগ রয়েছে, এমন দুটি পোশাক কারখানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা হামলা করেছে। আগামী দিনে এমন হামলার ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন।
এর আগে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে মিয়ানমারে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজন না হলে দেশটিতে অবস্থান না করার পরামর্শ দিয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিসহ শীর্ষ রাজনীতিকদের গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি হয়। পরে সু চির মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু করেন সাধারণ মানুষ। সেনা কর্তৃপক্ষের ব্যাপক দমন–পীড়ন ও প্রাণহানি সত্ত্বেও টানা ছয় সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলছে। চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। আটক হয়েছেন রাজনীতিক, শিক্ষার্থী, দেশি–বিদেশি সাংবাদিকসহ দুই সহস্রাধিক।