জাতিসংঘের সতর্ক বার্তা

মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি
ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের সাহায্যবিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস। গত সোমবার সতর্ক করে গ্রিফিথস বলেন, মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সংঘাত এবং পতনের মুখে থাকা অর্থনীতির কারণে ৩০ লাখ মানুষের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার প্রয়োজন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল মিয়ানমার নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে। বৈঠকটি মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির সরকারের পুনর্নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীর সঙ্গে মিলে যায়। চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নেয় জান্তা। আটক হন এনএলডির নেত্রী সু চিসহ মিয়ানমারের প্রভাবশালী গণতন্ত্রকামী নেতারা।

মিয়ানমারের গত বছরের নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা ওই নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে গণ্য করেছেন। জাতিসংঘ জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করতে এবং দেশকে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর জেমস কারিউকি সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে অনুরোধ করা হয়। কারণ, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জান্তা সেনা জড়ো করার বিষয়ে উদ্বেগে ছিল যুক্তরাজ্য। ঘটনাটিকে চার বছর আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রাখাইনে সংঘটিত নৃশংসতার আগে কার্যকলাপের প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন কারিউকি।

রোহিঙ্গাদের ওপর ২০১৭ সালে দমনপীড়নের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে মিয়ানমারকে। গ্রিফিথস এক বিবৃতিতে আরও বলেছেন, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে, কারণ চিন রাজ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং চিনল্যান্ড প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে লড়াই বেড়েছে। এর পাশাপাশি জান্তা সেনার সঙ্গে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সঙ্গে মাগওয়ে ও স্যাগাইন অঞ্চলেও সংঘর্ষ বেড়েছে। এতে ৩৭ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ১৬০টির বেশি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চার্চ ও মানবাধিকার সংগঠনের অফিসও রয়েছে।

গ্রিফিথস বলেন, মানবাধিকারকর্মী ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসামরিক জনগণ ও অবকাঠামোর ওপর হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে নিষিদ্ধ। এ ধরনের হামলা বন্ধ করতে হবে।