চলতি সপ্তাহে মিয়ানমারের জলসীমায় যে খালি জাহাজ ভেসে এসেছে, তার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। দেশটির নৌবাহিনী বলছে, ইন্দোনেশিয়ার পতাকাবাহী এই জাহাজটি বাংলাদেশের একটি জাহাজভাঙা শিল্প কোম্পানি কিনে এনেছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে পরিত্যক্ত জাহাজটি টাগবোট থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ শনিবার এই জাহাজের বিষয়ে কথা বলে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। তাদের ভাষ্য, জনমানবশূন্য ওই জাহাজটির সন্ধান পাওয়ার পর তারা মিয়ানমারের জলসীমার ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে একটি টাগবোটের খোঁজ পায়, যাতে ইন্দোনেশিয়ার ১৩ জন নাবিক ও ক্রু আছেন। ওই নাবিকেরা নৌবাহিনীকে জানিয়েছেন, তাঁরা বাংলাদেশি একটি জাহাজভাঙা শিল্প কোম্পানির জন্য ওই জাহাজটি টেনে আনছিলেন।
ওই ১৩ নাবিক-ক্রুর বরাত দিয়ে মিয়ানমারের নৌবাহিনী বলছে, ১৩ আগস্ট ইন্দোনেশিয়া থেকে এই জাহাজ নিয়ে রওনা দেয় ইনডিপেনডেন্ট নামের একটি টাগবোট। পরে বাংলাদেশের জলসীমার কাছাকাছি পৌঁছার পর এটি বৈরী আবহাওয়ার মুখোমুখি হয়। পরে নাবিকেরা টাগবোট থেকে পরিত্যক্ত জাহাজটির দড়ি কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
মিয়ানমারের নৌবাহিনীও বলছে, তারা ভাসমান ওই জাহাজের মাস্তুলের সঙ্গে দুটি কেবল (লোহার দড়ি) বাঁধা অবস্থায় পেয়েছে।
এর আগে মিয়ানমার টাইমসের খবরে জানানো হয়, চলতি সপ্তাহে বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের শহরতলি (থংওয়ার উপকূলে) ভেসে আসে ওই জাহাজ। যার দৈর্ঘ্য ৫৮০ ফুট। তবে এটি মরচে ধরা ও অনেকটাই জরাজীর্ণ। কনটেইনারবাহী বিশাল এই জাহাজের নাম ‘স্যাম রাতুলাঙ্গি পিবি ১৬০০’।
থংওয়ার পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থামা সেইতা গ্রাম থেকে সাত কিলোমিটার দূরে জাহাজটি প্রথম চোখে পড়ে। গ্রামবাসী বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ দল জাহাজে উঠে তল্লাশি করে সেখানে কোনো ব্যক্তি বা পণ্য পায়নি।
জাহাজটি কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর ইনডিপেনডেন্ট ফেডারেশন অব মিয়ানমার সিফারার্সের জেনারেল সেক্রেটারি অং কিও লিন মিয়ানমার টাইমসকে বলেছেন, জাহাজটি এখনো ব্যবহারের উপযোগী। তাঁর সন্দেহ, জাহাজটি সম্প্রতি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো কারণ আছে। বিশ্বজুড়ে জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণকারী মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, জাহাজটি ২০০১ সালে তৈরি। এএফপির খবরে জানানো হয়, মিয়ানমারে জাহাজটি চোখে পড়ার আগে সর্বশেষ রেকর্ড অনুয়ায়ী এটি ২০০৯ সালে তাইওয়ান উপকূলে ছিল।