মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় আজ মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আজ হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। নেপিডোয় বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে।
গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেলও ব্যবহার করে পুলিশ।
বিবিসি বর্মিজ জানায়, নেপিডোয় আজকের ঘটনায় বেশ কিছু বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে টানা চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন দেশটির হাজারো মানুষ।
বিক্ষোভের মুখে দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষ গতকাল সোমবারই নতুন বিধিনিষেধ জারি করে। তবে বিক্ষোভকারীরা এই বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে আজ আবার রাজপথে নামেন।
দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষ কিছু শহর-নগরে বড় জমায়েত নিষিদ্ধ করে। এ ছাড়া রাত আটটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত কারফিউও জারি করে।
নেপিডোয় পুলিশ তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তারা বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে দেয়। সতর্কবার্তায় বলা হয়, তিন স্তরের তৃতীয় স্তর পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করলেই গুলি চালানো হবে।
সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং নিজেই বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ার করে দেন। তিনি বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।
সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে বলা হয়, আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিক্ষোভকারীরা মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনর্বহালের দাবি করছেন। তাঁরা দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করছেন।
আজ সকালে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল বের হলে পুলিশ প্রথমে জলকামান ব্যবহার করে। জলকামানের মুখেও বিক্ষোভ চালিয়ে যান বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা ‘সেনাশাসন নিপাত যাক’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে পুলিশ একাধিক ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতেও কাজ না হলে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ।
নাম প্রকাশ না করে নেপিডোর একটি হাসপাতালের এক চিকিৎসা কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের হাসপাতালে আসা দুই বিক্ষোভকারীর আঘাত গুরুতর। তাঁদের মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁরা কীভাবে আহত হয়েছেন, তা এখনই স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে।
সামরিক বাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। একই সঙ্গে তারা দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনৈতিক নেতাদের আটক-গ্রেপ্তার করেছে। তারা সু চির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে তাঁকে রিমান্ডে নিয়েছে।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে টানা বিক্ষোভ করছেন দেশটির মানুষ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানাচ্ছে। তারা মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনর্বহালের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বাড়িয়ে চলছে।