মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। এতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত অনেকে। আজ বুধবার এ ঘটনা ঘটে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়ন সত্ত্বেও মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থীরা সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন। বিক্ষোভ দমানোর উপায় হিসেবে শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি ইন্টারনেটও বন্ধ করেছে দেশটির জান্তা।
মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থান হয়। সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহত লোকজনের মধ্যে শিশুরাও আছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে। অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) এ তথ্য জানিয়েছে।
মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কালে শহরে আজ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। সেখানে পাঁচজন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
কালে শহরের এক বাসিন্দা জানান, বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চির বেসামরিক সরকার পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, কালে শহরে বারবার গুলির শব্দ শোনা যায়। এই গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এদিন ইয়াঙ্গুনের কাছের বাগো শহরেও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হন।
বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে চীনের মালিকানাধীন একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা চীনের পতাকাও পুড়িয়েছেন।
গার্মেন্টস কারখানাটিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ক্ষয়ক্ষতিরও বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সেনা কর্তৃপক্ষকে সমর্থন করছে চীন। এ কারণে চীনের ওপর মিয়ানমারের আন্দোলনকারীরা ক্ষুব্ধ। গত মাসে ইয়াঙ্গুনে চীনা বিনিয়োগ রয়েছে, এমন ৩২টি কারখানায় আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা।
মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভ, ধর্মঘট, অসহযোগের মতো আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন গণতন্ত্রপন্থীরা। দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষ বলছে, এ আন্দোলন মিয়ানমারকে ধ্বংস করছে।
মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় অং সান সু চিসহ তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনী মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সেখানে টানা বিক্ষোভ চলছে।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় বইছে। মিয়ানমারের জান্তার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ নানাভাবে চাপ বাড়িয়ে চলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।