ইরানের অভিজাত বাহিনী বলে পরিচিত রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) মালিকানাধীন পাঁচটি নৌযান পারস্য উপসাগরে তেলবাহী একটি ব্রিটিশ ট্যাংকারকে হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ট্যাংকারটিকে ইরানের জলসীমায় থামতে বলা হলেও এক ব্রিটিশ রণতরির সতর্কবার্তায় সরে আসে ইরানি নৌকা। গতকাল বুধবার মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানায়।
এ ব্যাপারে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে ব্রিটিশ রয়্যাল মেরিন জিব্রালটার প্রণালিতে ‘গ্রেস ১’ নামে একটি ইরানি ট্যাংকার জব্দ করে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিরিয়ায় তেল নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহে ট্যাংকারটি জব্দ করা হয়। গতকাল সকালে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানান, ইরানের ট্যাংকার পাকড়াও করে ব্রিটেনকে ভুগতে হবে।
গত ৫ নভেম্বর ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে জুনে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি সই করা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র নাম প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। গত ২২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের তেল বিক্রি একেবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, মে মাস থেকে ইরানের কাছ থেকে কোনোও ক্রেতা কোনো তেল কিনতে পারবে না। মার্কিন সরকার হুমকি দেয়, কোনো দেশ ইরান থেকে তেল কিনলে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে।
এই নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ ইউরেনিয়ামের মজুত থাকার কথা, তার সীমা অতিক্রম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান।
ট্রাম্প ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে। রণতরি পাঠানোর পাশাপাশি যুদ্ধবিমানও মোতায়েন করে ওয়াশিংটন। এর মধ্যে গত মে ও জুন মাসে উপসাগরীয় অঞ্চলে তেলবাহী ছয়টি ট্যাংকারে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র; যদিও তেহরান সব সময় এই অভিযোগ নাকচ করে আসছে। এ বিষয় নিয়ে কথার লড়াই চলতে থাকে দুই পক্ষের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে গত ২০ জুন ইরান জানায়, আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় হরমুজ প্রণালিতে তারা গুলি করে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করেছে। পরে বিষয়টি স্বীকারও করে যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে অভিযোগ করে, এর আগের সপ্তাহেও ইরান মার্কিন একটি ড্রোনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল।