মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতাকারীদের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ হিসেবে তকমা দিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত না হতে আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের বিশেষ দূতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার। আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এ অভ্যুত্থানের বিরোধিতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আসিয়ানের বিশেষ দূতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ১০ দেশের আঞ্চলিক জোটের একাধিক সদস্য। এ আহ্বানের সমালোচনা করেছে মিয়ানমারের জান্তা।
মিয়ানমারে রক্তপাত বন্ধের পাশাপাশি শান্তি ফেরাতে গত বছর পাঁচ দফা ঘোষণা প্রকাশ করে আসিয়ান। এ ঘোষণা বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাজি হয় মিয়ানমারের জান্তা। কিন্তু মিয়ানমারে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। এ নিয়ে জোটের ওপর চাপ রয়েছে।
গত সপ্তাহে আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকের পর ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে যুক্ত সব পক্ষের সঙ্গে আসিয়ানের বিশেষ দূতের দেখা করাটা জরুরি।
অন্যদিকে মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য আসিয়ানের বিশেষ দূতের প্রতি আহ্বান জানায় মালয়েশিয়া। মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সদস্য ও অন্য জান্তাবিরোধীদের নিয়ে এই এনইউজি গঠিত। এটি মিয়ানমারের ‘ছায়া সরকার’ নামে পরিচিত। এনইউজির প্রধানতম লক্ষ্য মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফেরানো ও রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়া।
আসিয়ানের বিশেষ দূতের প্রতি এমন আহ্বানের জেরে এ বিষয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, পাঁচ দফা বাস্তবায়নে কিছু আলোচনা গঠনমূলক হলেও আসিয়ানের দুই সদস্য বেআইনি সংগঠন ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত হওয়ার জন্য জোটের বিশেষ দূতকে পরামর্শ দিয়েছে।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব গোষ্ঠীর (জান্তাবিরোধী) সঙ্গে বিশেষ দূতের আলোচনা বা সাক্ষাৎ করাটা আসিয়ান সনদের নীতির পরিপন্থী। একই সঙ্গে তা আসিয়ান জোটের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকেও ক্ষুণ্ন করে।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর অং সান সু চিসহ দেশটির অনেক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অনেকে আত্মগোপনে চলে যান।
দেশটিতে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে এক বছরের বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। এই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে জান্তার হাতে দেড় হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গ্রেপ্তার হাজারো।