মিয়ানমারে আটকের এক দিন পর বিবিসি বার্মিজ সার্ভিসের সাংবাদিক অং থুরাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে একটি আদালতের বাইরে সংবাদ সংগ্রহের সময় বিবিসির ওই সাংবাদিককে আটক করা হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, সেদিন অং থুরাসহ দুজন সাংবাদিককে আটক করা হয়। সাদাপোশাকের কয়েকজন ব্যক্তি ওই দুই সাংবাদিককে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর এ পর্যন্ত ৪০ জন সাংবাদিককে আটক করেছে জান্তা সরকার। এ ছাড়া মিয়ানমারের পাঁচটি গণমাধ্যম কোম্পানির অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। বিবিসির পক্ষ থেকে তাদের সাংবাদিকের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
গত শুক্রবার অং থুরার সঙ্গে আটক হওয়া আরেক সাংবাদিকের নাম থান হিতিক অং। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিজ্জিমাতে কাজ করেন। চলতি মাসেই মিজ্জিমার সম্প্রচার অনুমোদন বাতিল করে জান্তা সরকার।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত ১৪৯ জন মিয়ানমারের নাগরিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। বিবিসি বলছে, বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি। শুধু গত ১৪ মার্চ এক দিনেই সেখানে ৩৮ জন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। একটি পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী জানিয়েছে, দেশটিতে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তার বা আটক হয়েছেন হাজারো মানুষ।
এদিকে মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে আজ সোমবারও বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছে জান্তা সরকারবিরোধীরা। মিয়ানমারের নিরস্ত্র মানুষের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতার নিন্দা ও নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। বিবৃতিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সামরিক আইন তুলে নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটককৃতদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান করা হয়। জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে গণতন্ত্র পুনর্বহালের কথাও বলা হয় বিবৃতিতে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আজ সোমবার দেশটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংযোগস্থলে যানবাহনগুলো যাতে ভেঁপু বাজায়, সে জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় সেসব স্থানে অবস্থানরত বিক্ষোভকারীরা তিন আঙুল তুলে জান্তাবিরোধী স্যালুট দেবেন।