ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের তাবানান এলাকায় একটি মন্দিরের পাশে প্রাচীন একটি বটগাছে চড়ে নগ্ন অবস্থায় ছবি তোলায় এক রুশ দম্পতিকে বিতাড়িত করা হচ্ছে। বালিনিজ হিন্দু সংস্কৃতিতে ৭০০ বছরের পুরোনো ওই বটগাছকে পুণ্যস্থানীয় বলে বিবেচনা করা হয়। দ্বীপ কর্তৃপক্ষ বলেছে, স্থানীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অবমাননার অপরাধে গতকাল শুক্রবার ওই দম্পতিকে দ্বীপ এলাকা থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। খবর এএফপির।
বালিনিজ হিন্দু সংস্কৃতিতে পাহাড় ও গাছকে পুণ্যস্থানীয় বলে বিবেচনা করা হয়। সম্প্রতি এমনই একটি বটগাছে চড়ে নগ্ন অবস্থায় ছবি তোলেন রুশ নারী অ্যালিনা ফাজলিভা। তাঁর ছবি তুলে দেন স্বামী আন্দ্রেই ফাজলিভা। অ্যালিনা ছবিটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন। ইনস্টাগ্রামে অ্যালিনার হাজারো অনুসারী থাকায় ছবিটি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ছবিটি দেখে বালিনিজ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বালির অভিবাসনবিষয়ক প্রধান জামারুলি মানিহুরুক গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাঁরা স্থানীয় রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। সে কারণে তাঁদের ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি বিতাড়িত করা হচ্ছে।’ এই রুশ দম্পতি অন্তত ছয় মাস ইন্দোনেশিয়ায় নিষিদ্ধ থাকবেন। স্থানীয় প্রথা অনুযায়ী ওই পুণ্যস্থানের শুদ্ধি অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে হবে তাঁদের।
অ্যালিনা ফাজলিভা ইতিমধ্যে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ইংরেজি ও বাহাসা ইন্দোনেশিয়া ভাষায় ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বড় ভুল হয়ে গেছে।’
অ্যালিনা লিখেছেন, ‘বালিতে অনেক পুণ্যস্থান আছে। সব কটিতে সে তথ্য দেওয়া নেই। আমার ক্ষেত্রেও তেমন ঘটেছে। এসব জায়গা এবং ঐতিহ্যগুলোকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা জরুরি।’
বালির গভর্নর ওয়াইয়ান কস্তার বলেছেন, তাঁর প্রশাসন অশ্রদ্ধাশীল পর্যটকদের আর সহ্য করবে না।
এর আগে গত বছর বালি দ্বীপ থেকে প্রায় ২০০ মানুষকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের দিয়েও কেউ কেউ বিতাড়িত হয়েছেন।
গত মাসে কানাডার এক অভিনেতা ও স্বঘোষিত কল্যাণগুরুকেও বালি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। পুণ্যস্থানীয় মাউন্ট বাতুর নামে একটি আগ্নেয়গিরিতে নগ্ন হয়ে নিউজিল্যান্ডের মাওরি গোষ্ঠীর হাকানাচ নাচার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।