চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, রাশিয়ার ওপর আরোপ করা পশ্চিমা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে চায় না তাঁর দেশ। আজ স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেসের সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেছেন। গত মাসে ইউক্রেনের ওপর হামলা শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। খবর আল–জাজিরার
ওয়াং ই ফোনালাপের সময় বলেছেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেন সংকটে তাঁর দেশ কোনো পক্ষে নয়। তাই তাঁর দেশ কোনো নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চায় না।’
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, চীন নীতিগতভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে এবং বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করার অধিকার তাঁর দেশের রয়েছে। তিনি ইউক্রেনের প্রায় তিন সপ্তাহের এ সংঘাতকে বছরের পর বছর ধরে ইউরোপীয় নিরাপত্তা–দ্বন্দ্বের সঞ্চয় ও তীব্রতার ফসল বলে অভিহিত করেন।
স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটারে লিখেছেন, ‘আমি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল এবং যুদ্ধ বন্ধের উপায় নিয়ে কথা বলেছি।’
রাশিয়াকে বিশ্বমঞ্চ থেকে একঘরে করতে দেশটির ওপর চীনের সমর্থন প্রত্যাহার করতে চাপ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য চীনের কাছে রাশিয়া সামরিক ও অর্থসহায়তা চাচ্ছে। তবে এ কথা উড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং। হোসে ম্যানুয়েলের সঙ্গে আলোচনার সময় অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযোগের বিষয়টি আসেনি।
ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে চীন। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব গুজব ছড়ালে ইউক্রেনে সংঘাত আরও বাড়বে।
এর আগে গতকাল সোমবার চীনের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিশনের পরিচালক ইয়াং জেইচি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জেক সুলিভানের সঙ্গে ইতালির রাজধানী রোমে দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক হয়েছে। তাঁদের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে তাইওয়ান নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের অচলাবস্থা নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে চীন।
বৈঠকে ইয়াং ওয়াশিংটনকে তাইওয়ান ইস্যুটি কতটা সংবেদনশীল, তা বুঝিয়েছেন এবং তাদের বিপজ্জনক পথে না হাঁটার বিষয়ে সতর্কও করেছেন।
এদিকে হোয়াইট হাউস বলেছে, দীর্ঘ সাত ঘণ্টার বৈঠকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বাইডেন প্রশাসন গভীর উদ্বেগ জানায়। রোমে ওই বৈঠকের আগে সুলিভান রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সহায়তা না করার জন্য চীনকে সতর্ক করেছিলেন।
মস্কো অবশ্য বলেছে, তারা চীনের কাছ থেকে কোনো ধরনের সামরিক সাহায্য চায়নি। গত সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘রাশিয়ার অপারেশন চালিয়ে যাওয়ার নিজস্ব সক্ষমতা রয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে সবকিছু করা হচ্ছে। সময়মতো এবং সম্পূর্ণভাবে অভিযান সম্পন্ন হবে।’