ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের অভিজাত কুদস্ ফোর্সের কমান্ডার কাশেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইরানের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকির জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা হলে ইরানের ৫২টি স্থানে হামলা চালানো হবে। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর নতুন পদক্ষেপ নিতে চলেছে ইরানও। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৫ সালের আলোচিত পরমাণু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে পারে ইরান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বৃহৎ শক্তির সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তির ভবিষ্যৎ ঠিক করতে স্থানীয় সময় রোববার রাতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবেন ইরানের উচ্চপদস্থ নেতারা। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আব্বাস মৌসাভি বলেছেন, ‘আমাদের পরবর্তী পরমাণু কর্মসূচি কী হবে, সেটি ঠিক করতে রোববার রাতেই অত্যন্ত জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তির প্রয়োগ নিয়েও আলোচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হুমকিগুলো এটাই প্রমাণ করে, রাজনীতিতে পরিস্থিতির উন্নতি ও হুমকি একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।’
২০১৫ সালে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকার সময় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি হয় ইরানের। ওই চুক্তির মূল বিষয় ছিল, ইরান পরমাণু কার্যক্রম সীমিত রাখবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের যেকোনো পরমাণু স্থাপনায় যেকোনো সময় পরিদর্শন করতে পারবে। বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর গত বছর এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে ইরানের ওপর ফের অর্থনৈতিক অবরোধও আরোপ করেন তিনি। ওই চুক্তিকে ত্রুটিপূর্ণ ও একপেশে হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেছিলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জন থামানো যাবে না।
আরও পড়ুন:
ইরানের ৫২ স্থাপনায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
ইরানের ‘প্রতিশোধের’ হুমকির মধ্যে মার্কিন দূতাবাসের কাছে হামলা