উত্তর কোরিয়া স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক কুচকাওয়াজে সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য নতুন ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (এসএলবিএম) প্রদর্শন করেছে। এর আগে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কয়েক দফা বৈঠক করেন দেশটির রাজনৈতিক নেতারা। খবর রয়টার্সের।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ছবিতে চামড়ার তৈরি কোট ও টুপি পরা দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উনকে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে হাসতে ও হাত নাড়তে দেখা যায়। রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কিম ইল সুং স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হয় এই কুচকওয়াজ।
কুচকাওয়াজে সারি বেঁধে মহড়ায় অংশ নেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। প্রদর্শন করা হয় ট্যাংক ও রকেট লঞ্চারসহ বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র। শেষ দিকে বিশ্লেষকদের কথা অনুযায়ী নতুন ধরনের স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও এসএলবিএম দেখানো হয়।
অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শন করা হলেও এবারের কুচকাওয়াজে সেটি দেখানো হয়নি। ধারণা করা হয়ে থাকে, এই ক্ষেপণাস্ত্র থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে পারমাণবিক আঘাত করা সম্ভব।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, কুচকাওয়াজ চলাকালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র এসএলবিএম অনুষ্ঠানস্থলে একের পর এক ঢোকে। এগুলো সশস্ত্র বাহিনীর শক্তি প্রদর্শন করে।
বিশ্লেষকেরা বলেন, উত্তর কোরিয়া আগেই পানির নিচ থেকে এসএলবিএমের পরীক্ষা চালিয়েছে। এখন দেশটি এই ক্ষেপণাস্ত্র বহন করার উপযোগী সাবমেরিনের উন্নয়ন ঘটাতে চাইছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যায়, এসএলবিএমের গায়ে পুকগুকসং–৫ লেবেল লাগানো। এটি পুকগুকসং–৪ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ। পুকগুকসং–৪ গত অক্টোবরে আয়োজিত একটি কুচকাওয়াজে প্রদর্শন করা হয়।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক জেমস মার্টিন সেন্টার ফর ননপ্রোলিফারেশন স্টাডিজের (সিএনএস) গবেষক মাইকেল ডুইটসম্যান এক টুইটে লেখেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্র আগের সংস্করণের চেয়ে দৈর্ঘ্যে বেশি।
অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শন করা হলেও এবারের কুচকাওয়াজে সেটি দেখানো হয়নি। ধারণা করা হয়ে থাকে, এই ক্ষেপণাস্ত্র থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে পারমাণবিক আঘাত করা সম্ভব।
একের পর এক সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন ও নতুন সমরাস্ত্র প্রদর্শন করা প্রসঙ্গে সিউলের এহোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিফ–এরিক ইজলে বলেন, ‘এই কুচকাওয়াজের উদ্দেশ্য উসকানি দেওয়া নাও হতে পারে। তবে পিয়ংইয়ংয়ের কাছে বিষয়টি যেভাবে অগ্রাধিকার পাচ্ছে সেটি চিন্তার।’