ডাইনোসরের দুটি পা। দুটিতেই ছুরির মতো ধারালো নখ। ৬ কোটি ৬০ লাখ থেকে সাড়ে ১৪ কোটি বছর আগে এ প্রজাতির ডাইনোসর এশিয়ার উপকূলীয় এলাকাজুড়ে দাপিয়ে বেড়াত। নতুন এক গবেষণায় নতুন প্রজাতির এ ডাইনোসরের কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মার্কিন ও জাপানি বিজ্ঞানীরা এ গবেষণা করেছেন।
বিজ্ঞানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম লাইভ সায়েন্স বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, দ্বিপদী এ ডাইনোসর ক্রিটেসিয়াস যুগের। জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় দ্বীপ হোক্কাইডোতে পাওয়া জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে নতুন প্রজাতির এ ডাইনোসর শনাক্ত করা হয়েছে। গবেষকেরা বলেন, এশিয়া অঞ্চলের সামুদ্রিক পললভূমিতে পাওয়া প্রথম জীবাশ্ম এটি। এই জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে ডাইনোসরের নতুন প্রজাতির সন্ধান মেলে। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ‘প্যারালিথেরিজিনোসরাস জাপোনিকাস’।
গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ ডাইনোসর থেরিজিনোসর গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এ গোত্রের ডাইনোসর মূলত দ্বিপদী। এটি তৃণভোজী ও তিন আঙুলবিশিষ্ট ডাইনোসর। আর এ প্রজাতির ডাইনোসরের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ছুরির মতো নখ। ধারালো সেই নখ প্রাণী শিকারের চেয়ে গাছপালা কাটাকাটিতে বেশি ব্যবহার করত এ ডাইনোসর।
যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের সাউদার্ন মেথডিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা নিবন্ধের সহযোগী লেখক অ্যান্থনি ফিওরিলো বলেন, এসব ডাইনোসর তাদের নখ মূলত খাবার খোঁজার সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করত। এ নখ ব্যবহার করে ঝোপঝাড় ও গাছ মুখের কাছে টেন আনত। ধারণা করা হয়, এ ডাইনোসরের মৃত্যু হয়েছিল ভূমিতেই। পরে তা ভেসে সাগরে চলে যায়। ২০০৮ সালে হোক্কাইডোতে অন্য একদল গবেষক এ ডাইনোসরের জীবাশ্মটি পান। তবে তাঁরা এর প্রজাতি শনাক্ত করতে পারেননি। সম্প্রতি গবেষকেরা তথ্য বিশ্লেষণ করে একে থেরিজিনোসর গোত্রের বলে শনাক্ত করেন। তাঁদের তথ্য অনুযায়ী, এ ডাইনোসর ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতো আর ওজন হতো তিন টনের কাছাকাছি।