তালেবান কি তাহলে আর সন্ত্রাসবাদী নয়? ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে বৃহস্পতিবারও এ প্রশ্নের কোনো স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। যদিও এটুকু বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ভারত এখনো মনস্থির করেনি।
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কথায়, ভারতের প্রধান উদ্বেগ, আফগানিস্তানের মাটি যেন ভারতবিরোধিতার কাজে ব্যবহৃত না হয়। আফগানিস্তানের ঘটনাপ্রবাহ, তালেবানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল, তাদের স্বীকৃতিদান ইত্যাদি বিষয়ে সরকারের এ মুহূর্তের নীতি হলো অপেক্ষার। সর্বদলীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ কথা জানিয়ে বলেছিলেন, আপাতত নীতি ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’।
বস্তুত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে তালেবান–সম্পর্কিত ভারতের বর্তমান ধারণার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। যে তালেবান ভারতের কাছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে পরিচিত এবং ভারতের এত দিনকার নীতি ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংলাপ নয়’, তা পরিবর্তন হয়েছে কি না, বারবার নানাভাবে এ প্রশ্নের জবাব জানতে চাওয়া হয়। জানার চেষ্টা হয় তালেবান সম্পর্কে ভারতীয় মনোভাব এখন কী? তারা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন কি না। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী এসব প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।
অরিন্দম বাগচী এমনকি এ কথাও জানাতে চাননি, দোহায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনায় তালেবান নেতা শের মোহম্মদ আব্বাস স্ট্যানিকজাইয়ের মনোভাব ও ভারতের কাছে তাঁদের প্রত্যাশা কী ছিল। ওই বৈঠকের পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে বিবৃতি প্রচারিত হয় তাতে বলা হয়েছিল, তালেবানের আগ্রহেই ওই বৈঠক হয়। বিবৃতিতে যা বলা হয়েছে তার বাইরে ‘আর কিছু বলার নেই’ বলে মুখপাত্র জানান।
আফগানিস্তান ও তালেবান প্রসঙ্গে মুখপাত্র বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বারবার বলেন, ভারতের নজর শুধু একটাই। আফগানিস্তানের জমি ভারতবিরোধী কাজে যেন ব্যবহৃত না হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টিই নিশ্চিত করতে চাই। এদিকেই নজর দেব।’
তালেবান সরকারের চরিত্র কেমন হবে, এখনো অজানা। ভবিষ্যৎ সরকার গঠনের অনুষ্ঠানে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে কোনো খবর তাঁর কাছে নেই বলেও মুখপাত্র জানিয়েছেন। নতুন সরকারকে স্বীকৃতির প্রশ্নে তিনি বলেন, দোহায় একটা বৈঠক হয়েছে। তালেবানের আগ্রহেই সেই বৈঠক। এখন পর্যন্ত এটুকুই। ওই বৈঠককে স্রেফ একটা বৈঠক বলেই ধরা দরকার। স্বীকৃতির বিষয় বিবেচনার সময় এখন নয়।