তেহরিক–ই–তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সদস্যদের সঙ্গে গোলাগুলিতে পাকিস্তানের চার সেনা নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দেশটির সেনাবাহিনী এসব তথ্য জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ডিসেম্বরের শুরুতে তালেবান ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যকার অস্ত্রবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাতের ঘটনা এটি।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর ওয়াজিরিস্তানের মির আলি শহরে সন্দেহজনক জঙ্গি আস্তানাগুলোতে অভিযান চালাচ্ছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তখন দুপক্ষের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। আর তাতে প্রাণ হারান চার সেনা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ এক ‘সন্ত্রাসী’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
টিটিপির দাবি, তাদের সংগঠনকে লক্ষ্য করেই অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে তারা দাবি করেছে, বুধবার রাতে সেনাবাহিনীর ওপর পাল্টা হামলা চালিয়েছে তারা। এতে সাত সেনাসদস্য নিহত হন। তবে তালেবানের পক্ষে কোনো প্রাণহানি হয়নি।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, শুক্রবার খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আলাদা এক সংঘর্ষের ঘটনায় দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। ওই জঙ্গিরা নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। এ ছাড়া লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালানো এবং অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করত তারা। তবে দ্বিতীয় এ ঘটনা নিয়ে তালেবান কোনো মন্তব্য করেনি।
২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তেহরিক–ই–তালেবান পাকিস্তান। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের স্কুলে ভয়াবহ তালেবান হামলায় প্রায় ১৫০ শিশু নিহত হয়। জবাবে তালেবান সদস্যদের ওপর ইসলামাবাদ ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু করলে এর সদস্যরা আফগানিস্তানে পালাতে বাধ্য হয়। আলাদাভাবে পরিচালিত হলেও টিটিপি ও আফগান তালেবানের শিকড় একই। আফগানিস্তানে গত আগস্টে তালেবান ক্ষমতা দখল করার পর সতর্ক রয়েছে পাকিস্তান। টিটিপিকে ঠেকানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
২০২১ সালের নভেম্বরে টিটিপি ও ইসলামাবাদ একটি অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছেছিল। তবে ১০ ডিসেম্বর তা ভেঙে যায়। তালেবানের অভিযোগ, সরকারি বাহিনী চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।