যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হাত ধরে ২০ বছর আগে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পতন হয়েছিল। এবার ঠিক উল্টোটা ঘটল। মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ল, আর দেশটি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে গেল। গতকাল রোববার দেশটির রাজধানী কাবুল দখলে নেওয়ার পর তালেবানের অধীনে আজ সোমবার আফগানদের জন্য প্রথম সকাল। অনেক আফগানের জন্য দিনটি শুরু হয়েছে ভয়, উদ্বেগ, আতঙ্ক এবং কাবুল ছাড়ার তাড়া নিয়ে।
আজকের সকালটা অনেক আফগানদের জন্য স্বস্তির নয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো যে খবর দিচ্ছে, তাতে এটা খানিকটা স্পষ্ট। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, তালেবান নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে কাবুলে। কাবুলবাসী রাত্রিযাপন করেছে ভয়, শঙ্কা আর আতঙ্কের মধ্য দিয়ে।
কাবুল পতনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর দৈনিক পত্রিকা স্টার্স অ্যান্ড স্ট্রিপস শিরোনাম করেছে ‘অভিযান শেষ’। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, কাবুল থেকে মার্কিন কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ ছেড়েছেন। টুইটারে আজ সকালে পত্রিকাটির প্রথম পাতার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
গতকাল রোববার যে চিত্র দেখা গেছে কাবুলের সড়কে, তার বিপরীত চিত্র দেখা গিয়েছিল প্রায় ২০ বছর আগে। ২০০১ সালের ১৩ নভেম্বর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সহায়তায় কাবুলে প্রবেশ করেছিল তালেবানবিরোধী যোদ্ধারা। তখন সড়কে সাধারণ মানুষকে দেখা গেছে। অনেক শিশুকে দেখা গেছে তালেবানবিরোধী ওই যোদ্ধাদের ট্যাংকের পেছনে দৌড়াতে। কালও এমন দৃশ্য দেখা গেছে। কাবুল নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গতকাল তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষকে কথা বলতে দেখা গেছে।
এমন উৎসুক জনতা যেমন রয়েছে, তেমনি ভয়ে রয়েছেন অনেকে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, কাবুলে তালেবান যোদ্ধারা প্রবেশের পর থেকে মানুষ আতঙ্কে। কাবুল ছেড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যাঁরা এলাকা ছাড়তে চাইছেন, তাঁদের সুযোগ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহল ইতিমধ্যে আহ্বানও জানিয়েছে। এ জন্য ৬০টি দেশ একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। কাবুলের বিমানবন্দরে অনেককে ভিড় করতে দেখা গেছে গতকাল। আজ সকালেও এই ভিড় অব্যাহত ছিল।