জ্বালানিসংকট, শ্রীলঙ্কায় দিনে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না

দুদিন ধরে শ্রীলঙ্কার কোথাও কোনো ডিজেল তেল নেই
ছবি: এএফপি

শ্রীলঙ্কার আর্থিক দুর্দশা প্রকট আকার ধারণ করেছে। জ্বালানির মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশটিতে। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, দেশজুড়ে দিনে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। আজ বুধবার থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হয়েছে। খবর এএফপির।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কায় মারাত্মক আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেই। এ কারণে আমদানিও করতে পারছে না। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্র।

শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ খাতে একচেটিয়া আধিপত্য রয়েছে একটি সংস্থার। রাষ্ট্রায়ত্ত ওই সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দিনে ১০ ঘণ্টা দেশজুড়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে জেনারেটর চালানোর মতো তেল নেই। এ মাসের শুরু থেকেই দেশটিতে দিনে সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।

সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, জ্বালানির সংকট ছাড়াও জলবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকেও খুব কম বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার মোট বিদ্যুতের ৪০ শতাংশের বেশি উৎপাদিত হয় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে। কিন্তু দেশটির বেশির ভাগ জলাধারে পানি এখন অনেক কম। কারণ, অনেক দিন থেকেই দেশটিতে সেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে না।

শ্রীলঙ্কার বেশির ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় কয়লা ও তেলের মাধ্যমে। তেল ও কয়লা দুটিই আমদানি করতে হয়। কিন্তু দেশটিতে এখন তেল ও কয়লার মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তেল ও কয়লা আমদানি করতে পারছে না সরকার। কারণ, তেল ও কয়লা আমদানির জন্য যে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন, তা সরকারের হাতে নেই।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান জ্বালানি কোম্পানি সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (সিপিসি) বলছে, অন্তত দুদিন ধরে দেশটিতে কোনো ডিজেল তেলও নেই।

তেলের জন্য পেট্রল স্টেশনের সামনে গাড়ি নিয়ে লোকজন ভিড় করছেন। সিপিসি তাদের বলেছে, এখন চলে যান। ডিজেল আমদানির পর তখন আসতে হবে।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের শুরু থেকে দেশটির মানুষ ৯২ শতাংশ বেশি দাম দিয়ে পেট্রল ও ৭৬ শতাংশ বেশি দামে ডিজেল কিনেছেন।

কর্মকর্তারা বলেছেন, সর্বশেষ এলপিজি ও কেরোসিনের যে চালান এসেছে, ১২ দিনের মধ্যেই তার মূল্য পরিশোধে ৪৪ মিলিয়ন ডলারের খোঁজে রয়েছে সরকার।