জাপানের রাজসিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে বর্তমান যুবরাজ আকিশিনোর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রোববার এক রাজকীয় অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত বছর আকিশিনোর বড় ভাই নারুহিতোর সম্রাট হিসেবে অভিষেক হলেও এত দিন সাম্রাজ্যের পরবর্তী উত্তরাধিকারী ঘোষণা করা হয়নি। এবার সেই ঘোষণা দেওয়া হলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গত এপ্রিলে জাপানের রাজপ্রাসাদের নতুন সম্রাটের সিংহাসনে আরোহণ উপলক্ষে কিছু রাজকীয় অনুষ্ঠান পালনের কথা ছিল।
কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও অন্যান্য দেশের মতো জাপানে করোনা মহামারি ভয়াবহ রূপ নেয়নি, তবুও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
জাপানের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, শুধু পুরুষেরাই সম্রাট হতে পারেন বা সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হতে পারেন। তাই সম্রাট নারুহিতোর মেয়ে প্রিন্সেস আইকোর পক্ষে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হওয়া সম্ভব ছিল না। অবশ্য সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল একসময়। কিন্তু ২০০৬ সালে আকিশিনোর ছেলেসন্তান জন্ম নেওয়ার পর তা আর করা হয়নি।
রোববারের রাজকীয় অনুষ্ঠানে ৫৪ বছর বয়সী আকিশিনো বলেছেন, যুবরাজের দায়িত্ব তিনি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেছেন এবং শিগগিরই নতুন দায়িত্ব বুঝে নেবেন।
এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবার মুখেই মাস্ক ছিল। মূলত করোনাভাইরাস মহামারির কারণেই পুরো অনুষ্ঠানে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিল।
গত বছরের মে মাসে নতুন সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে বসেন নারুহিতো। তিনি হচ্ছেন জাপানের ইতিহাসে প্রথম সম্রাট, যিনি বিদেশে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলে থাকেন, সম্রাটের পরিবারে ব্যতিক্রমী সদস্য হিসেবে উদার পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন নারুহিতো। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক ভাবনাচিন্তায় নানা দিক থেকে প্রভাবিত হয়েছেন তিনি। ফলে শান্তি ও মৈত্রীর বার্তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা সম্রাট নারুহিতো রাখতে পারেন।
নারুহিতো ও আকিশিনোর বাবা সাবেক সম্রাট আকিহিতো অসুস্থতার কারণে জীবদ্দশায় সিংহাসন ছাড়েন। জাপানে এর আগে ১৮১৭ সালে স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল।
সম্রাট আকিহিতো মূত্রথলির ক্যানসারে আক্রান্ত।