ছেলেসহ মাহিন্দার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও ছেলে নামাল রাজাপক্ষে
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

শ্রীলঙ্কার সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে, তাঁর ছেলে নামাল রাজাপক্ষেসহ ১৫ সহযোগীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবীদের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপি ও রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে।

গত সোমবার বিক্ষোভকারীদের ওপর এ হামলার ঘটনায় সরকার পক্ষের ওপরও ব্যাপক পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে নয়জন নিহত হন। আহত হন তিন শতাধিক।

সোমবারের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলার ঘটনাটি পুলিশকে তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন কলম্বোর এক ম্যাজিস্ট্রেট।

সোমবার নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর পরিবারের সমর্থকদের হামলায় উসকানি দেওয়ার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেন বিক্ষোভকারী ও দেশটির ধর্মীয় নেতারা। এর জেরেই মূলত পাল্টা হামলা শুরু হয়।

গত শুক্রবার থেকে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। বিক্ষোভের লাগাম টানতে এরপর জারি করা হয় কারফিউ। এরই মধ্যে সোমবারের হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভে রাজাপক্ষের অনুগত ব্যক্তিদের কয়েক ডজন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামবানটোটায় রাজাপক্ষের পৈতৃক বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়।

গত মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার আগেই সেনা পাহারায় কলম্বোয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ছাড়েন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। এর আগে হাজারো বিক্ষোভকারী বাসভবনের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা রাজধানীর ‘টেম্পল ট্রিজ’ বাসভবনের মূল দোতলা ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আটকা পড়েন।

করোনার ধাক্কার পাশাপাশি সরকারের কিছু ভুল সিদ্ধান্তে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্দশার মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। কয়েক মাস ধরে খাবার, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটি। ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, চলছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। এ পরিস্থিতিতে সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।

অচলাবস্থা নিরসনে গত শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মাহিন্দা রাজাপক্ষকে পদত্যাগ করতে বলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া সম্পর্কে মাহিন্দা রাজাপক্ষের ছোট ভাই। সোমবার পদত্যাগ করেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে।

এদিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। আজ সন্ধ্যায় রনিল বিক্রমাসিংহের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হলেও দেশটির চলমান অচলাবস্থা শিগগিরই কাটছে না বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ছাড়া জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।