নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই চোখধাঁধানো নতুন অস্ত্রসম্ভারে নিজেকে সমৃদ্ধ করার বিষয়টি উন্মোচন করেছে চীন। দেশটির সেনাবাহিনী যেসব অস্ত্রের কথা প্রকাশ করেছে, এর সবই অত্যাধুনিক।বেশ আড়ম্বরপূর্ণভাবে এরই মধ্যে এসব অস্ত্রের কোনো কোনোটির পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু নতুন প্রযুক্তির এ অস্ত্রগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে কতটা সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। চীনের নতুন অস্ত্রসম্ভার নিয়ে গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, কিছু অস্ত্রপ্রযুক্তিতে চীনই এখন ‘বিশ্বের নেতৃত্বে’। নতুন বছরে উন্মোচন করা চীনের এসব নতুন অস্ত্রের কয়েকটি হলো:
দ্য মাদার অব অল বম্বস (এমওএবি)
চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস চলতি জানুয়ারির শুরুতে বলেছে, চীন তার ‘মাদার অব অল বম্বস’-এর নতুন সংস্করণের পরীক্ষা চালিয়েছে। এটি পারমাণবিক বোমার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শক্তিধর। সামরিক বিশ্লেষক ওয়েই ডংজুকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি বলেছে, ‘এই বোমা অতি সহজে ও পুরোপুরিভাবে স্থলভাগের সুরক্ষিত লক্ষ্যবস্তু যেমন মজবুত ভবন, দুর্গ ও প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম।’ এমওএবি যুক্তরাষ্ট্রের অনুরূপ বোমা ‘ম্যাসিভ অর্ডিন্যান্স এয়ার ব্লাস্ট (এমওএবি)’-এর চেয়ে আকারে ছোট ও ওজনে হালকা।
দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড স্টিল গ্রেট ওয়াল (ইউএসজিডব্লিউ)
চীনের সেনাবাহিনী ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)’-এর ওয়েবসাইটে ১৩ জানুয়ারি এক লেখায় দাবি করা হয়, ইউএসজিডব্লিউ হলো একগুচ্ছ প্রতিরক্ষা স্থাপনা, যা চীনের অজ্ঞাত পার্বত্য এলাকায় ভূগর্ভের নিচে স্থাপিত। শত্রুর আক্রমণ থেকে সামরিক ঘাঁটি রক্ষা করাই এই দেয়ালের উদ্দেশ্য।
জাহাজবিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ জলসীমায় বেইজিংয়ের দাবিকৃত দ্বীপপুঞ্জের কাছে সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি একটি গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার পাঠায় মার্কিন নৌবাহিনী। এ ঘটনার পর চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, চীনা সেনাবাহিনী ডিএফ-২৬ নামের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে। এটি সাগরে মাঝারি ও বড় জাহাজকে ধ্বংস করতে সক্ষম। গ্লোবাল টাইমস বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ৩ হাজার ৪০০ মাইল।
দুই আসনের স্টিলথ বোমারু বিমান
দুই আসনের স্টিলথ বোমারু বিমান জে-২০ স্টিলথ যুদ্ধবিমানের নয়া সংস্করণ। জে-২০ স্টিলথ যুদ্ধবিমান প্রথমবারের মতো পিএলএর বিমানবাহিনীতে যুক্ত হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। দুই ইঞ্জিনের নতুন সংস্করণের বিমানটিতে দ্বিতীয় পাইলটের জন্য আসন থাকতে পারে। বর্তমানে যেসব স্টিলথ যুদ্ধবিমান আছে, সেগুলো এক আসনবিশিষ্ট। তাই চীনা সংস্করণের বিমানটি হতে পারে বিশ্বের প্রথম দুই আসনের স্টিলথ বোমারু বিমান।
সুপার সোলজারস উইথ ফিউচারিস্টিক ওয়েপনস
‘সুপার সোলজারস উইথ ফিউচারিস্টিক ওয়েপনস’ হাতে ধরার উপযোগী এক বিশেষ ছুরি। এটি পিস্তল ও অ্যাসল্ট রাইফেলের সমন্বিত বৈশিষ্ট্যসংবলিত, যা দিয়ে যেমন গুলি ছোড়া যাবে, তেমনি ছোড়া যাবে গ্রেনেডও। চীন তার বিশেষ বাহিনীগুলোর সদস্যদের ‘সুপার সোলজার’ হিসেবে তৈরি করতেই এ অস্ত্র উদ্ভাবন করেছে।