গৃহকর্মী থেকে বিউটি কুইন!

মেলানি মিলানো
মেলানি মিলানো

পেশায় একজন গৃহকর্মী মেলানি মিলানো। হংকংয়ে থাকেন তিনি। অন্যের বাড়িতে সারা সপ্তাহ হাড়ভাঙা খাটুনি যায় তাঁর। সপ্তাহে মোটে এক দিন তিনি ছুটি পান। সেই ছুটির দিনটিতে স্থানীয় এক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েই বাজিমাত করেছেন মেলানি। প্রতিযোগিতায় সেরা সুন্দরীর খেতাব জিতেছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের নাগরিক এই মেলানি মিলানো। সপ্তাহে ছয় দিন গৃহকর্মী হিসেবে তিনি কাজ করেন। দিনপ্রতি সর্বোচ্চ ১৮ ঘণ্টা খাটুনি যায় তাঁর। কিন্তু মাসের শেষে মাইনে জোটে অতি সামান্য। সপ্তাহের প্রতি রোববার ছুটি পাওয়া যায়। এই ছুটির দিনে স্থানীয় সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজেদের মধ্যে নানা ধরনের প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। এগুলোই তাঁদের অবসর কাটানোর একমাত্র উপায়। এমনই এক প্রতিযোগিতায় সেরা সুন্দরীর খেতাব জিতেছেন মেলানি।

হংকংয়ে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন প্রায় তিন লাখ বিদেশি নাগরিক। মূলত পাশের দেশ ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন থেকেই বেশি মানুষ সেখানে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে যান। অন্যদিকে হংকংয়ের আইন অনুযায়ী গৃহকর্মীদের কর্মস্থলেই থাকতে হয়। অর্থাৎ গৃহকর্তার বাসায় থেকেই কাজ করার বিষয়ে তাঁদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অভিযোগ আছে, এমন আইনের কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অসুবিধায় পড়েন গৃহকর্মীরা।

৩০ বছর বয়সী মেলানি জানান, প্রতিদিনের কাজের পর সামান্যই অবসর পান তিনি। ওই সময়টায় নাচতে তাঁর খুব ভালো লাগে। জায়গা না পাওয়ায় কখনো কখনো রান্নাঘরই হয়ে যায় তাঁর ‘ড্যান্সিং ফ্লোর’! স্থানীয় সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এর ফলে তাঁর আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। গৃহকর্মী হিসেবে কাজের পাশাপাশি অন্যান্য ভূমিকায় নিজেকে দেখার ইচ্ছে আছে মেলানির। কারণ, এতে একদিকে অভিজ্ঞতার ভান্ডার সমৃদ্ধ হয়, অন্যদিকে বন্ধুর সংখ্যাও বাড়ে।

ফিলিপাইনের নাগরিক মেলানি মিলানো সপ্তাহে ছয় দিন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। সম্প্রতি স্থানীয় এক প্রতিযোগিতায় সেরা সুন্দরীর খেতাব জিতেছেন তিনি। ছবিটি বিবিসির সৌজন্যে

মেলানি বলছেন, সুন্দরী প্রতিযোগিতার জন্য তাঁকে প্রায় আট সপ্তাহ চর্চা চালাতে হয়েছে। অবশেষে তিনি জয়ী হয়েছেন। মেলানি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি জয়ী হতেই চেয়েছিলাম। সুন্দরী প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়ায় আমি অত্যন্ত গর্বিত।’

সব শেষে মোক্ষম কথাটি বলেছেন মেলানি। সৌন্দর্যের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সৌন্দর্য কখনোই চেহারায় থাকে না। থাকে হৃদয়ে।’